মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় শিক্ষক বাবা-মা। সন্তানকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য বাবা যেমন দিকনির্দেশনা দেন, তেমনি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবিকতা, সততা ও মূল্যবোধকে ধারণ করতে শেখান।
একজন আদর্শ বাবা তার ছেলেকে বড় মানুষ নয়, বরং প্রকৃত মানুষ হওয়ার উপদেশ দিয়েছেন। তার উপদেশগুলো শুধু ছেলের জন্য নয়, প্রতিটি তরুণ-তরুণীর জীবনদর্শন হয়ে উঠতে পারে।
প্রথমেই তিনি শেখান, ছোটখাটো কাজে নিজে উদ্যোগী হতে। যেমন জুতায় দাগ পড়লে মুচির দোকানে না গিয়ে নিজেই পরিষ্কার করতে হবে। এটি স্বনির্ভরতার শিক্ষা। আবার গৃহকর্মী বা শ্রমজীবী মানুষদের অবমাননাকর শব্দে ডাকতে নিষেধ করেছেন। তিনি মনে করিয়ে দেন, তারা-ও কারো ভাই-বোন বা মা-বাবা। তাই তাদের প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে।
উপদেশে বারবার উঠে এসেছে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। বয়স, পদ বা শিক্ষাগত কারণে কাউকে ছোট না করে, বরং সবার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের শিক্ষা দেন তিনি। জীবনে উন্নতি করার পরও যেন কেউ অন্যের ঘাড়ে পা দিয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা না করে এটিই তার অন্যতম বাণী।
তিনি ছেলেকে মনে করিয়ে দেন, সাহায্য করলে যেন তা প্রদর্শন না করা হয়। কারণ এতে অন্যরা লজ্জিত হতে পারে। আবার সব সময় পাওয়ার থেকে দেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে, যেহেতু প্রদানকারীর হাত সব সময় উপরে থাকে।
পরিবার ও সামাজিক জীবনে দায়িত্ববোধের উপরও জোর দেন তিনি। বিশেষ করে মা-বউয়ের বিষয়ে ন্যায়ের পথে চলতে এবং কাউকে ছোট করতে না শেখানোর উপদেশ দেন। একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে দেন, অন্যের ঘরে নিমন্ত্রণ খেলে কখনো সমালোচনা না করতে এবং খাবারের প্রতি লোভী না হয়ে নিজ ঘর থেকেই তৃপ্ত হয়ে যেতে।
এই উপদেশগুলোতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পরিবারের মর্যাদা রক্ষায়। একজন মানুষের ব্যবহারেই বোঝা যায় সে কেমন পরিবার থেকে এসেছে। তাই কথাবার্তা ও আচরণে যেন পরিবারের মান অক্ষুণ্ণ থাকে।
শেষদিকে তিনি বলেন, শ্বশুর-শাশুড়িকে বাবা-মায়ের মতোই সম্মান দিতে হবে। এভাবে চললে সংসার শান্তি ও ভালোবাসায় ভরে উঠবে। সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো সব সময় নম্র ও ভদ্র থাকতে হবে, তবে অন্যায়ের সাথে আপোষ করা যাবে না।
সন্তানকে দেওয়া বাবার এই উপদেশগুলো শুধু পারিবারিক নির্দেশনা নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। এ শিক্ষাগুলো অনুসরণ করলে যে কেউ বড় মানুষ নয়, বরং প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারবে।
সূত্রঃ দৈনিক টার্গেট