গেল ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদেশি দায়ের ৫৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার পরিশোধ হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৪৭৯ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। সে হিসাবে দায় পরিশোধের পরিমাণ ১৯ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রাপ্রবাহ বৃদ্ধির ফলে পরিশোধ হয়েছে রেকর্ড বিদেশি দায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী এই পরিশোধের পরও বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভবেড়ে জুন শেষে ৩১ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। গত ২৮ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিগত সরকারের সময়ে সবচেয়ে অস্বস্তি ছিল ডলার বাজারে। রেকর্ড মূল্যস্ফীতির মূলে ছিল ডলারের দর বৃদ্ধি। সংকটের কারণে বিদেশিদের কাছে বকেয়া বাড়ছিল। ভারতের আদানিসহ অনেকের সঙ্গে টানপোড়েন চলছিল। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর হয়েছে সরকার। এরপর রেমিট্যান্সও বাড়তে শুরু করে। গত অর্থবছর ব্যাংকিং চ্যানেলে রেকর্ড ৩ হাজার ৩৩ কোটি ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় যা প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। আবার রপ্তানি আয়ে ৯ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি রয়েছে। এর মধ্যে গত জুনে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, রেমিট্যান্সে উচ্চপ্রবাহ, রপ্তানি আয় বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রয়েছে। ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হয়েছে। আগের বকেয়া দায় পরিশোধের পরও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। শুধু সরকারি খাতে বৈদেশিক দায় পরিশোধ হয়েছে, তেমন নয়। পণ্য আমদানি করেও তা পরিশোধ না করার প্রবণতা ব্যাপক বাড়ছিল। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় মেয়াদোত্তীর্ণ আমদানি দায়ের পরিমাণ ছিল ৪৪ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর হুঁশিয়ারির পর তা কমে গত ডিসেম্বর শেষে ২০ কোটি ডলারে নেমেছিল। গত মার্চ শেষে নেমেছিল ১০ কোটি ৫৪ লাখ ডলারে। এরপর জুন শেষে আরো কমে ১ কোটি ২০ লাখ ডলারে নেমেছে। এসব বিলে এমন ত্রুটি বা মামলা রয়েছে, যে কারণে পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আমদানি বিলের বকেয়া কমাতে গত ২০ এপ্রিল এক নির্দেশনার মাধ্যমে গ্রাহকের সম্মতি নিয়ে ত্রুটিপূর্ণ আমদানি বিলের দায় পরিশোধের সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আমার বার্তা/এল/এমই