রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বিএসসি ও ডিপ্লোমাধারী প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের বিষয়টি সরকার খুবই গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। তবে আমাদের একটু সময় দিতে হবে। আমরা চেষ্টা করব নিরপেক্ষ থেকে বা পক্ষপাতিত্ব না করে সমাধান করার। যাতে উভয় পক্ষ লাভবান হয়।
তিনি বলেন, যেহেতু সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখছে তাই, আমি মনে করি, শিক্ষার্থীদের নতুন করে আর কর্মসূচি দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর যৌক্তিকতা নিরীক্ষাপূর্বক সুপারিশ প্রণয়নের জন্য গঠিত কমিটির প্রথম সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
ফাওজুল কবির খান বলেন, হঠাৎ করেই তিন দফা বা সাত দফা বা তার খণ্ডিত অংশ মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া যায় না। তাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা তিনটি গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা করব। একটি হচ্ছে যারা আন্দোলন করছেন তারা। দ্বিতীয় হলো এদের অভিভাবক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা। যাদের কথা শিক্ষার্থীরা শোনেন, তাদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করব। আর প্র্যাকটিক্যাল লেভেলে কী হচ্ছে, কেন এ সমস্যাটা হচ্ছে- এটা বোঝার জন্য সবচেয়ে বেশি যারা প্রকৌশলী নিয়োগ দেন পিডব্লিউডি, এলজিইডি, পিডিবি, তাদের সঙ্গেও আমরা বসব। তাদের সঙ্গে যে শুধু ওয়ার্কিং গ্রুপ বসবে তা নয়, আমরাও বসব।
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শাটডাউন করে দেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে আশু সমাধান কী- জানতে চাইলে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, যেটা বললাম, এখন এটাই সমাধান। ওনারা তো এখন থেকে যেকোনো সময় ওয়ার্কিং গ্রুপের সঙ্গে বসতে পারেন।
একদিকে তিন দফা দাবি আছে আরেক দিকে সাত দফা দাবি। আমাদের তো প্রথমে শুনতে হবে, বুঝতে হবে। সবকিছু জানতে হবে। আমরা তো এখন ঘোষণা দিতে পারব না যে তিন দফা মেনে নিলাম বা সাত দফা মেনে নিলাম বা এখান থেকে দুই দফা মানলাম, ওখান থেকে একদফা মানলাম। আগে শুনতে হবে, জানতে হবে, বুঝতে হবে। তারপরই তো করতে হবে।
ফাওজুল কবির খান বলেন, আমরা জানাতে চাই বিষয়গুলো, বুঝতে চাই। এরপর নিরপেক্ষতার সঙ্গে, কারো পক্ষপাতিত্ব না করে এ সমস্যার একটা ন্যায্য সমাধান করার চেষ্টা করব।
বিএসসি ও ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের বোঝানোর অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলন তো করেছেন, সেটা তো হয়ে গেছে, সরকার তো এটা সিরিয়াসলি নিয়েছে। আমরা তো দেখছি... এখন তো আর আন্দোলন করে কোনো লাভ নেই।
গতকালও আপনারা আহ্বান জানিয়েছিলেন সেটা তো তারা মানেনি। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমাদের আহ্বান তারা শুনেছেন। শাহবাগ থেকে তারা ক্যাম্পাসে চলে গিয়েছিলেন। এজন্য আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা সবাইকে বলব এই পরিস্থিতিটা যাতে আর ইয়ে (জটিল) না হয়, কারণ এটা আমরা দেখছি। আমাদের একটু সময় দিতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, একটা দাবি গ্রহণ করলে একদল খুশি হবে, আর একটা দাবি গ্রহণ করলে আরেক দল খুশি হবে। আমাদের তো এটা বিবেচনায় আনতে হবে, এখানে একটা সেতু গড়তে হবে। যাতে দুই পক্ষই এক জায়গায় আসতে পারে। এমন একটা সমাধান যাতে করতে পারি দুই পক্ষই লাভবান হবে।
এসময় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কমিটি কেমন করে কাজ করবে আজকে আমরা সেটা ঠিক করেছি। যে সমস্যাগুলো এসেছে সেগুলো আসলে আজকের সমস্যা নয়, এগুলো বহুদিন আগের সমস্যা। তাই এগুলো সমাধান করতে হলে সবার সঙ্গে আমাদের পরামর্শ করতে হবে। সেজন্য আমরা একটা ওয়ার্কিং গ্রুপ করে দিয়েছি। সেই ওয়ার্কিং গ্রুপে মোট ১৪ জন প্রতিনিধি থাকবেন।
তিনি বলেন, এ কমিটি ডিপ্লোমা এবং বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের বক্তব্যগুলো আগে শুনবেন। পরবর্তী কার্যদিবসে তাদের বক্তব্যগুলো শুনবেন। বিএসসি বলি আর ডিপ্লোমা বলি, ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে যারা বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালো ওয়াকিবহাল আছেন, তাদের বক্তব্য এই কমিটি শুনবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা আরও বলেন, অনেক আইনগত বিষয় আছে, সেগুলোর অনেক কাগজপত্র দিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেগুলো দেখে তারা আমাদের আবার ব্রিফ করবেন। সেই মোতাবেক আমরা এগিয়ে যাব।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, সবার কাছে আমাদের একটি অনুরোধ থাকবে- যেহেতু এগুলো অনেক পুরোনো বিষয়, তাই আন্দোলন যারা করছেন তারা যাতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করেন।
আমার বার্তা/এমই