বাংলাদেশে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা: সমস্যা ও সম্ভাবনা বিষয়ক সেমিনার আজ শনিবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএএ ফায়েজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রেজাউল করিম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এএসএম আমানুল্লাহ, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সাঈদ ফেরদৌস এবং বারডেম হাসপাতালের প্রফেসর ও ডায়াবেটিক সোসাইটির সভাপতি ড. একে আজাদ খান। সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, মেধার পাচার রোধ করতে হলে একটি ‘ট্যালেন্ট হান্ট পুল’ গঠন করা জরুরি। এর মাধ্যমে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের উন্নত দেশে পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়ে তাদের পুনরায় দেশে ফিরিয়ে এনে কাজে লাগাতে হবে। পাশাপাশি সময়ের দাবি মেনে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা কারিকুলাম চালু করলে জনসংখ্যার চাপকে সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ফায়েজ বলেন, “চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা এখন সময়ের দাবি। কর্মমুখী বিশেষায়িত শিক্ষা ছাড়া বিপুল তরুণ প্রজন্মকে জনসম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব নয়।” তিনি কারিগরি শিক্ষার প্রতি সমাজের অবজ্ঞা বন্ধ করার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন প্রশ্ন তোলেন— বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা কি শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণ করছে? তিনি বলেন, দক্ষতা উন্নয়ন না হওয়ায় বিপুলসংখ্যক তরুণ বেকার হয়ে ঘুরছে, যা জাতীয় সংকট তৈরি করছে। শিক্ষাকে শিল্পের সাথে সংযুক্ত করে সময়োপযোগী ও বাজার-চাহিদাভিত্তিক কারিকুলাম প্রণয়নের উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার শিক্ষা কৌশলের উদাহরণ টেনে বলেন, “ওরা যেভাবে মেধা পাচার রোধ করেছে, সেভাবে আমাদের শিক্ষানীতিতেও যুক্ত করতে হবে।”
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) এর সদস্য সচিব সৈয়দ রেজাউনুল কবির। তিনি বলেন, “উত্তম রাষ্ট্র বিনির্মাণে প্রফেশনাল ও সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার দিকেও নজর দিতে হবে।”
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামরুল আহসান। তিনি বলেন, “প্রতিবছর ২.৫ লাখ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলেও শিক্ষার মানোন্নতি হচ্ছে না। ১০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে যারা ভালো ফল করতে পারে না, তারা কোথায় যাচ্ছে?” তিনি উল্লেখ করেন, ডিগ্রিধারীদের বড় অংশ বেকার থেকে যাচ্ছে। চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা ও বাস্তবভিত্তিক গবেষণা না থাকায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল বা রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে মূল দায়িত্ব পালন করেছে বিদেশি প্রকৌশলীরা। অথচ আমাদের প্রকৌশলীরা উচ্চশিক্ষিত হয়েও এ কাজে নেতৃত্ব দিতে পারেনি। এটাই চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার অভাবের প্রমাণ।”
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এএসএম আমানুল্লাহ বলেন, “প্রতিবছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ১০ লাখ গ্রাজুয়েট বের হয়, কিন্তু ৪০ শতাংশ বেকার থেকে যায়।” তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যাব-প্র্যাকটিক্যাল না হওয়ার বিষয়কে নৈতিক অবক্ষয় বলে অভিহিত করেন এবং দক্ষ শ্রমিক তৈরি না করে বিদেশে অদক্ষ শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করার আহ্বান জানান।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সাঈদ ফেরদৌস বলেন, “কেবল এমএ বা এসএসসি সার্টিফিকেটের চেয়ে কর্মমুখী শিক্ষার দিকে শিক্ষার্থীদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।”
সেমিনারে বক্তারা আরও বলেন,
আমার বার্তা/এমই