শিল্পখাতে ভূগর্ভস্থ পানি বিনামূল্যে উত্তোলনের প্রথা বন্ধে সরকার চূড়ান্ত নীতিমালা প্রণয়নের পথে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, 'বর্তমানে করপোরেট সেক্টর ভূগর্ভস্থ পানিকে একটি ফ্রি রিসোর্স হিসেবে ব্যবহার করছে, যা পরিবেশ ও পানি নিরাপত্তার জন্য হুমকি। জলবায়ু পরিবর্তনের এই যুগে বিনামূল্যে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন আর চলতে পারে না।'
বুধবার (২১ মে) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ‘Water Reuse and Recycle: Launching of National Alliance’ শীর্ষক কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্বব্যাংকের 2030 Water Resources Group এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
নীতিমালা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়েছে, যারা বিজিএমইএ, বিটিএমএসহ বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা করবে কীভাবে শিল্পখাতে পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, পুনঃব্যবহার বৃদ্ধি এবং দূষিত পানি নদীতে ফেলা বন্ধ করা যায়।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'পানি পুনঃব্যবহারের জন্য একটি সময়োপযোগী প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়েছে, যা সরকারি-বেসরকারি ও সুশীল সমাজের মধ্যে কার্যকর সেতুবন্ধন তৈরি করবে।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধিও এখন সময়ের দাবি। সরকার শিল্পখাতে পানি ব্যবস্থাপনা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণকে জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করছে।
কনফারেন্সে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মহিদুস সামাদ খাঁন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন পানি সম্পদ সচিব নাজমুল আহসান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন, এফবিসিসিআই'র প্রশাসক হাফিজুর রহমান, বিজিএমইএ-এর প্রশাসক আনোয়ার হোসাইন, এফআইসিসিআই'র পরিচালক আলা উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি মাইকেল জন ওয়েবস্টার।
কনফারেন্সে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, টেক্সটাইল ও চামড়া শিল্প, বর্জ্য পানি পরিশোধন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সমাজ ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাসহ প্রায় ৩৫০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।
এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে শিল্পখাতে টেকসই পানি ব্যবস্থাপনার পথ উন্মুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আমার বার্তা/এমই