পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বৈরিতা দৃশ্যমান। সীমান্তে নিয়মিত সংঘাতের পাশাপাশি একাধিকবার বড় ধরনের যুদ্ধেও জড়িয়েছে দেশ দুটি। সংঘাতের মূল কারণ কাশ্মীর। সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনায় ফের দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কঠোর পদক্ষেপের কারণে ফের যুদ্ধ বাঁধতে পারে। বিশেষ করে, সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করায় উত্তেজনা পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দারের মধ্যে ফোনে কথা হয়েছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার চীনা মন্ত্রীকে বর্তমান আঞ্চলিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। ফোনালাপে উভয় দেশই পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং একতরফা ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জারির আশা ব্যক্ত করেন।
ইসহাক দার আরও জানান, পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ করতে পাকিস্তান চীন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখবে।
এ সময় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পেহেলগামে হামলার ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তকে সমর্থন করে চীন। আশা করি উভয় পক্ষই সংযম প্রদর্শন করবে। একে অপরের দিকে এগিয়ে আসবে এবং উত্তেজনা কমাতে কাজ করবে।
এদিকে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানায়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি রক্ষায় ইসলামাবাদের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে বেইজিং। চীন ও পাকিস্তান এই অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়নসহ সবক্ষেত্রে গভীর সম্পর্ক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
চীন ছাড়াও ভাতৃপ্রতীম দেশ সৌদি আরব, ইরান ও মিসরকেও ভারতের সঙ্গে চলা উত্তেজনার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা করেছে পাকিস্তান।
উল্লেখ্য, পেহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সব ধরনের বাতিল হয়েছে ভিসা। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতও করেছে ভারত।
পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে একই ধরনের পদক্ষেপ দিয়েছে পাকিস্তানও। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতে ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ, সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানান, সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। তিনি বলেছেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের ‘রক্ত ফুটছে’। হামলায় জড়িত প্রত্যেককে কঠিনতম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
আমার বার্তা/জেএইচ