বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের জামথল এলাকায় অবস্থিত অবৈধ বালু ব্যাবসা দীর্ঘ ১৬ বছর থেকে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার দখলে ছিল। এখন এই ব্যবসা বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইসহাক ও তার দলের নেতাকর্মী এবং জামারপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বিএনপির কতিপয় নেতা ও পৌর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় সীমান্তবর্তী যমুনা নদী থেকে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার বালু লোপাট হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অবাধে এই বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গন বাড়ার পাশাপাশি পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
জামালপুর ও বগুড়া দুই জেলার সীমান্তের অজুহাত দেখিয়ে কোন প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিষয়টি রহস্যজনক মনে করছে এলাকাবাসী। তারা অভিযোগ করেছে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এই বালু উত্তোলন চলছে।
জামালপুর বগুড়ার সীমান্ত ঘেঁষা যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও বিক্রির উৎসব শুরু করে সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মোল্লা। তার কবল থেকে গত বছর ৫ আগস্ট তা দখলে নেন সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইসহাক ও তার দলের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন থেকে দিনরাত অবৈধভাবে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলনের করার পর তা উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে নিজেদের পকেট ভারি প্রতিমাসে প্রায় ১ কোটি টাকার বালু বিক্রি হচ্ছে।
বালু মহলের সাথে সংশ্লিষ্ট এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশের না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ম্যানেজ করে যমুনায় বালু তোলা হয়। এই বালু প্রতিদিন জামালপুর, ময়মনসিংহ, শেরপুর. টাঙ্গাইলে এই সব বালু বিক্রি হয়। এ জন্যই এপারের নেতা ও প্রশাসনকে মাসিক হিসাবে মোটা অংকের টাকা দিতে হচ্ছে।
বালু বিক্রির বিষয়ে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইসহাক প্রামাণিক বলেন, মাদারগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতার বালু ছিল আমরা তার কাছ থেকে কিনে নিয়েছি। যমুনা থেকে বালু তোলার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে কাজলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মোল্লার ভাতিজা সোহেল মোল্লা বলেন, আমার চাচার বালু ছিল, ৫ আগস্টের পর চাচা আত্মগোপনে যাওয়ার পর সব দখলে নিয়েছে বিএনপির সভাপতি ইশাহাক ও সাধারণ সম্পাদক মুহিদুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদির শাহ কোন কথা না বললেও বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান টেলিফোনে বলেন, আমরা যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ কারার জন্য কয়েক বার ভ্রাম্যমাণ আদালতে জড়িতদের শাস্তি ও জরিমানা করেছি।
প্রশাসন ম্যানেজ করার ব্যাপারে অস্বীকার করে বলেন, তারা অবৈধ ব্যবসা করে তাই আমাদের নাম ব্যবহার করছে। তবে আমরা বালু সিন্ডিকেটের ব্যাপারে কঠোর।
এলাকাবাসী জানান, জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় এই বালু পরিবহণ ও বিপণন হলেও স্থানীয় প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
আমার বার্তা/এল/এমই