গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এখন পর্যন্ত ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনদের যে আলোচনা হয়েছে এবং তার ভিত্তিতে যতটুকু ঐকমত্য তৈরি হয়েছে সেগুলোকে নথিবদ্ধ করতে হবে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আহ্বানে অনুষ্ঠিত সংলাপে গণসংহতি আন্দোলনের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নিয়ে এই আহ্বান জানান।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু, হাসান মারুফ রুমী ও মনির উদ্দীন পাপ্পু এবং সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, ইমরাদ জুলকারনাইন, দীপক রায় ও তরিকুল সুজন।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় যেসব সংস্কার প্রস্তাবে এখনও পর্যন্ত ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি, সেগুলো নিয়ে অধিকতর আলাপ-আলোচনা চালিয়ে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ঐকমত্য তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ঐকমত্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচনকে সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন হিসেবে সম্পন্ন করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হয়। যেসব সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে তা ১৫ জুলাইয়ের মধ্যেই লিপিবদ্ধ করে জুলাই চার্টার ঘোষণার ব্যাপারে জোর দেন প্রতিনিধি দলের নেতারা।
জুলাই চার্টারের ভিত্তিতে সংবিধান সংক্রান্ত সংস্কারগুলোকে সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচনের পর করা এবং অন্যান্য সংস্কারগুলোকে অধ্যাদেশের মাধ্যমে নির্বাচনের আগেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার আহ্বান জানায় গণসংহতি আন্দোলন।
সংস্কার প্রস্তাবগুলোর মধ্যে যেসব বিষয়ে সবার ঐকমত্য হবে না, সেগুলোকে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায় গ্রহণের জন্য নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাকি বলেন, এক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবনা আকারে এসব প্রস্তাব জনগণের সামনে আসবে। জনগণই ভোটের মাধ্যমে নির্ধারণ করবে তারা কোন কোন দলের প্রস্তাবে সম্মতি দিচ্ছে। এভাবে সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়নে জনগণের সর্বোচ্চ সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে।
বৈঠকে ইতিপূর্বে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে ১৩৮টি সংস্কার প্রস্তাবে সম্মতি জানানো হয়েছে বলে জানানো হয় দলটির পক্ষ থেকে।
দলটির পক্ষে আরও বলা হয়, আরও যেসব বিষয়ে বিশেষ প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে আলোচনা হয়। বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ এনসিসি-র বিষয়ে যেন সবাই একমত হতে পারে সেজন্য আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ঐকমত্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা হলে সেটি যেন সংসদের উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত হয় সে বিষয়েও প্রস্তাব রাখেন তারা।
ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি ও সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচনের ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন।
বৈঠকে সংস্কার এবং নির্বাচন যেভাবে মুখোমুখি অবস্থানে এনে সংকট তৈরি হচ্ছে সেটি সমাধানে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভূমিকা জোরদার করার আহ্বান জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান নেতা সাকি।
সংস্কার এবং নির্বাচনকে পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে বিবেচনা করে সবি রাজনৈতিক দল, জনগণ এবং অংশীদারদের মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টির ব্যাপারে ঐকমত্য কমিশন সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে বলে আশা করেন তিনি। নিজের দলের পক্ষ থেকে জোরদার ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সাকি।
আমার বার্তা/এমই