মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে ক্রমেই অনিশ্চয়তা বাড়ছে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। এই প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ের প্রধান বিকল্প হয়ে উঠেছে স্বর্ণ।
এমন পরিস্থিতিতে স্বর্ণের বাজার নিয়ে অশনি সংকেত দিয়েছে বিশ্বখ্যাত মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগান। ব্যাংকটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৬ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের মধ্যেই প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছাড়িয়ে যেতে পারে ৪ হাজার ডলার। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রামানে এই দাম দাঁড়ায় ৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকারও বেশি।
পূর্বাভাসটি সঠিক প্রমাণিত হলে বছরের শেষ নাগাদ দেশের বাজারে ভরিপ্রতি ২ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে স্বর্ণের দাম।
জেপি মরগানের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, চলতি বছর প্রতি প্রান্তিকে গড় স্বর্ণ চাহিদা থাকতে পারে প্রায় ৭১০ টন, যার কারণে বজায় থাকতে পারে দামের উর্ধ্বমুখী ধারা। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ স্বর্ণের গড় দাম হতে পারে ৩ হাজার ৬৭৫ ডলার (প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা)। তবে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও বাড়লে স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে আরও আগেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ ক্রয়ের গতি যদি হঠাৎ কমে যায়, তবে তা হবে বাজারের জন্য একটি বড় নেতিবাচক চ্যালেঞ্জ। একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যদি ট্যারিফের চাপ সামলেও শক্ত অবস্থানে থাকে এবং ফেড সুদের হার বাড়ায়, তবে তা স্বর্ণের চাহিদায় ধাক্কা দিতে পারে।
বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তার মধ্যে স্বর্ণ হয়ে উঠছে বিনিয়োগকারীদের প্রধান নিরাপদ আশ্রয়। এর মধ্যেই স্পট গোল্ড মার্কেটে ২০২৫ সালের শুরু থেকে স্বর্ণের দাম ২৯ শতাংশ বেড়েছে এবং ইতিহাসে রেকর্ড ২৮ বার শীর্ষে উঠেছে। সবশেষ মঙ্গলবারও (২২ এপ্রিল) প্রথমবারের মতো তা আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ ডলারের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছে, যা বিশ্ববাজারে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
এই পরিস্থিতিতে গোল্ডম্যান স্যাকস তাদের পূর্ববর্তী পূর্বাভাস সংশোধন করে জানিয়েছে, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৭০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। এমনকি তারা সতর্ক করে বলছে, যদি বাজারে অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, তাহলে এ সময়ের মধ্যেই প্রতি আউন্সে স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৫০০ ডলারে গিয়ে পৌঁছানো অসম্ভব নয়।
আমার বার্তা/জেএইচ