দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে চলমান গ্যাস সংকট নিরসন এবং নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
বুধবার (২০ আগস্ট) সচিবালয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ অনুরোধ জানান বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। এ সময় সংগঠনের পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম ও এ.বি.এম. সামছুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বৈঠকে যোগ দেন।
সাক্ষাতে বিজিএমইএ সভাপতি তৈরি পোশাক শিল্পে গ্যাস সংকটের প্রভাব তুলে ধরে বলেন, পর্যাপ্ত চাপ না থাকায় অনেক কারখানা পূর্ণ উৎপাদনে যেতে পারছে না। এর ফলে রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এই সংকট মোকাবিলায় বিজিএমইএ সভাপতি পাঁচটি জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব করেন:
১. পোশাক ও বস্ত্র শিল্পকে অগ্রাধিকার: দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সুরক্ষার জন্য গ্যাসের নতুন সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে শ্রমঘন পোশাক ও বস্ত্র শিল্পকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
২. যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া দ্রুত করা: তিতাস গ্যাসের নতুন সংযোগ অনুমোদনের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় কর্তৃক যাচাই-বাছাই কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার আহবান জানান, যাতে করে কারখানাগুলো সময়মতো উৎপাদন শুরু করতে পারে।
৩. আবেদনের তালিকা পৃথককরণ: লোড বৃদ্ধির প্রয়োজন নেই, শুধু সরঞ্জাম পরিবর্তন, পরিমার্জন বা স্থানান্তরের জন্য আবেদনকারীদের একটি আলাদা তালিকা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত প্রদান করার অনুরোধ জানানো হয়।
৪. কম লোড বৃদ্ধি আবেদনকারীদের অগ্রাধিকার: কম লোড বৃদ্ধির আবেদনকারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগ প্রদানের প্রস্তাব করা হয়, যা ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলোকে দ্রুত উৎপাদনে যেতে সাহায্য করবে।
৫. গ্যাস রেগুলেশন: ধামরাই ও মানিকগঞ্জের মতো যেসব এলাকার গ্যাস পাইপলাইনের শেষ প্রান্তে অবস্থিত কারখানাগুলোতে গ্যাসের চাপ কমে যায়, সেখানে অন্তত ৩-৪ পিএসআই চাপ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা ধরে রাখা এবং বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সুরক্ষিত রাখতে পোশাক শিল্পের পথ সুগম করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিজিএমইএ সভাপতির কথা মনোযোগ সহকারে শোনেন। তিনি বলেন, বেসরকারি উদ্যোগে সর্ববৃহৎ কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাত, পোশাক শিল্পকে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং এ খাতের সমস্যাগুলো নিরসনে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক রয়েছে। তিনি বিজিএমইএ সভাপতির উত্থাপিত বিষয়গুলো জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে বলে বিজিএমইএ সভাপতিকে আশ্বস্ত করেন।
আমার বার্তা/এমই