ঝিনাইদহে স্কুলমাঠে সড়ক নির্মাণের ইট-বালু-পাথর রেখে বিটুমিন জ্বালানোর কাজ চলছে। এতে ক্ষতিকর কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে শ্রেণিকক্ষসহ আশপাশের এলাকায়। ধোঁয়া এড়াতে স্কুলের বারান্দা ঢেকে ফেলা হয়েছে পলিথিনে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বুধবার বেলা ১০টার দিকে সদর উপজেলার কালীচরণপুর ইউনিয়নের মোসলেম উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সড়ক নির্মাণের পাথর-বালু ও বিটুমিনের ব্যারেল পড়ে আছে। পাশে চলছে বিটুমিন জ্বালানোর কাজ। এতে ঘন কালো ক্ষতিকর ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে পুরো এলাকায়। ধোঁয়া এড়াতে স্কুলের বারান্দা ঢেকে ফেলা হয়েছে পলিথিনে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। প্রকাশ্য দিবালোকে স্কুলমাঠে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব হোসেন বলেন, স্কুলমাঠে রাস্তার নির্মাণের পাথর, বালু ও পিচ জ্বালানোর কাজ করছে। পাথর ছড়িয়ে পড়েছে মাঠজুড়ে। এতে আমাদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। কালো ধোঁয়ার কারণে ক্লাস করা কষ্টকর।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলিবর্দ্দি বিশ্বাস বলেন, স্কুলমাঠে সড়ক নির্মাণ সামগ্রী রাখার ব্যাপারে আমিসহ আমার সহকর্মী সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে আমরা কিছু করতে পারিনি। আমরা বাধ্য হয়েছি ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করতে।
স্থানীয়রা জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের সামনে হামদহ স্ট্যান্ড থেকে নারিকেলবাড়িয়া বাজার পর্যন্ত সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয় মাস চারেক আগে। ওই সড়ক নির্মাণের জন্য পাথর-বালু ও বিটুমিনের ব্যারেল মোসলেম উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় বিএনপির নেতাদের ম্যানেজ করে প্রভাবখাটিয়ে ঠিকাদার মিঠু খান ও রাসেল আহমেদ স্কুল মাঠে মালামাল রেখেছে। শেষ পর্যন্ত স্কুলের মাঠেই বিটুমিন জ্বালানোর কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মিঠু খাঁ বলেন, সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। এলাকার মানুষ ও স্কুল কমিটির লোকজন সবাই বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে স্কুলের মাঠ ব্যবহারের জন্য আমাদের অনুমতি দেয়। বিটুমিন এক থেকে দুদিন জ্বালানো হয়। মাঠে ধান ও অন্যান্য ফসল থাকায় আমরা খোলা জায়গা না পেয়ে স্কুলের মাঠ ব্যবহার করেছি। আর কখনোই কোনো স্কুলের মাঠে এ কাজ করব না।
সদর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই সড়কটির কাজ করছে ঠিকাদার মিঠু খা ও রাসেল। তারা সড়ক নির্মাণের মালামাল স্কুলের মাঠে রেখেছে কিনা জানা নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম কাগজপত্র দেখে জানাতে পারব।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি যদি চায় তাহলে স্কুলমাঠ ব্যবহার করার অনুমতি দিতে পারে। তবে পাঠদান ব্যাহত হয় বা শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হয় এমন কাজ করার সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
আমার বার্তা/এল/এমই