যশোরের ঝিকরগাছার বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সামসুর রহমানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মুহা. আবুল কালাম আজাদ নামের এক ব্যক্তি। সোমবার সকাল ১১টার সময় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনকারী বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মুহা. আবুল কালাম আজাদ তিনি তার লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে বলেন, অত্যান্ত গর্বের সাথে বলছি কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রথম উদ্যোগটা ছিল আমার। এজন্য অনেক পরিশ্রমি ও কৌশলী হতে হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রথম সভার পূর্ব থেকে আমরা কিছু যুবক বাঁকড়া উন্নয়নে সাংগঠনিক ভাবে ভূমিকা রাখি। সেই প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় বাঁকড়া কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠা কালীন সময় আমি ও ইব্রাহিম ছিলাম সার্বক্ষনিক কর্মী। আমার সংসার পরিবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দিকে যতটা খেয়াল ছিল তার চেয়ে বেশি ছিল কলেজ প্রতিষ্ঠার কাজে। কলেজ প্রতিষ্ঠা কালীন সময়ে সাংগঠনিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হই। কলেজের কার্যক্রম ধারাবাহিকা বজায় রাখতে আমিও ইব্রাহিম হোসেন অধ্যক্ষ মহোদয়কে সার্বক্ষনিক সহযোগিতা করি। এছাড়াও আমি কলেজের অবকাঠামো উন্নয়ন, কলেজের একাডেমিক স্বীকৃতি ও এমপিও কাজে নিবেদিত ছিলাম। কলেজের অফিসিয়াল কাজ অনিবার্য কারণে তখন আমাকে করতে হতো সেটা অধ্যক্ষ মহোদয়ের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
ওই সময় কলেজকে এগিয়ে নিতে অধ্যক্ষকে সঙ্গ দিতাম। যে কারণে কলেজটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূর্নাঙ্গতা পায়। ১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ কলেজের প্রথম সভা হয়, ১৯৯৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে এবং ০১/০১/১৯৯৫ তারিখ থেকে কলেজের শিক্ষকগণ এমপিও সুবিধা পান। এ সমস্ত কাজে আমার ছিল নিরলস প্রয়াস। কলেজের সাংগঠনিক কমিটি থেকে বিধি অনুযায়ি নিয়মিত কমিটি গঠনের জন্য প্রতিষ্ঠাতা শ্রেণি ও দাতা শ্রেণির সদস্য নির্বাচন করা । কলেজের ১০/৯৫ নং সভার সিদ্ধান্ত অনুযয়ি আমি আবুল কালাম আজাদ একমাত্র প্রতিষ্ঠাতা ও একক ভোটার হতে সক্ষম হই। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের বিধি অনুযায়ী ঝিকরগাছার ১৬১নং মুকুন্দপুর মৌজার সাবেক ১০৯৬ হাল ২৪ নং দাগে এক বিঘা (৩৩শতাংশ) পঁচিশ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদ জমি বাঁকড়া কলেজের প্রতিষ্ঠাতা শ্রেণির সদস্য হতে ইচ্ছুক হয়ে ১৩/০৮/১৯৯৫ তারিখে রেজিষ্ট্রী দানপত্র সম্পাদন করি। যা সেই সময় থেকে কলেজ দখল ও খাজনা প্রদান করে আসছে। যার ফলশ্রুতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে গভর্নিং বডিতে ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতিষ্ঠাতা শ্রেণির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হই এবং ২০১৯ সাল পর্যন্ত ওই পদে ছিলাম।
অতীব বেদনার বিষয়ে একক ভোটার হওয়া স্বত্ত্বেও অধ্যক্ষ সামসুর রহমান চরম স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের অক্রান্ত নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গভর্নিং বডি (সংশোধিত) সংবিধি ২০১৯ চরম লঙ্ঘন করে আমাকে ২৯/১০/২০১৯ থেকে ২৬/১১/২০২১, ২৭/১১/২০০১ থেকে ২৬/১১/২০২৩ এবং ২৭/১১/২০২৩ থেকে ২৬/১১/২০২৫ পর্যন্ত তিনটি রেগুলার গভর্নিং বডিতে রাখেননি। সর্বশেষ দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে কলেজের যে এডহক কমিটি গঠিত হয়েছে নিয়ম থাকা স্বত্ত্বেও সেই এডহক কমিটিতে আমাকে রাখা হয়নি। যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রবিধানমালার চরম লংঘন। আমি বিএনপির রাজনৈতির সাথে যুক্ত থাকায় আমাকে ফ্যাসিবাদ শাসনামলে কলেজ গভর্নিং বড়িতো তিনটি রেগুলার কমিটিতে রাখা হয়নি। পটপরিবর্তনের পরেও রাজনীতির দলীয় গ্রুপিং এর কারণে এডহক কমিটিতে রাখা হয়নি। আমার অভিযোগ। জিবিতে না রাখায় আমার অধিকার ক্ষুন্ন ও অপমান অপদস্ত করা হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাতারাতি ১৮০ডিগ্রি ঘুরে সেই পুরানো খেলায় মেতেছে অধ্যক্ষ সামসুর রহমান।
বিগত দিনে তার অপকর্ম ঢাকতে দ্রুত তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। এজন্য কাউকে সন্তুষ্ট করতে নিয়মকে অনিয়মে পরিনত করে চলেছেন এই মহা দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ। তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, অধ্যক্ষ সামসুর রহমান একজন মহা দুর্নীতিবাজ। কলেজে বিভিন্ন সময় কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে চরম অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের সাথে যুক্ত। আমি মিডিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্ত পূর্বক যথাযত ব্যবস্থা ও প্রতিকারের প্রার্থনা করছি। এসময় তার সাথে ছিলেন, বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাকাীন সদস্য ইব্রাহীম হোসেন। এ বিষয়ে বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সামসুর রহমান বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯৩ সালে আর তিনি ১৯৯৫সালে জমি দিয়েছেন। তিনি প্রতিষ্ঠাতা হলে আমার কোন সমস্যা নেই। আমার একার বিষয় তো না। কলেজের গভনিং বোর্ডের মধ্যে আমিও একজন সদস্য। কলেজের গভনিং বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নিবে আমি তাতে একমত।