ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ধরন্তির আকাশী বিলের পূর্ব উত্তর পাশে অবৈধভাবে সাতটি এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে চলছে ফসলি জমির মাটিকাটা ধুম। প্রকাশ্যে এ মাটিকাটা চললেও প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা না থাকায় ভূমি আইন অমান্য করে অবাধে অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করেই চলছে অসাধু মাটিখেকো ব্যবসায়ীরা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ধরন্তি আকাশি বিলের পূর্ব উত্তর পাশে ৭টি এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে সেই মাটি ১০/১২ মাহিন্দ্র ট্রাক্টর করে পাঠানো হচ্ছে আশা ইটভাটায়। এছাড়াও নৌকা দিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় মাটি পাঠানো হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মাটি ব্যবসায়ীরা ধরন্তি আকাশি বিলে ৭টি ভেকু নামিয়েছে মাটি কাটার জন্য, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে একদল মাটি কাটে আরেকদল বন্ধ রাখে। এইভাবে চলতে থাকে মাটি কাটা ধুম। মাটি ব্যবসায়ীরা হলেন, রমজান ১, রাসেল, মুক্তার, রমজান ২, আরও অনেকই।
কৃষিবিদদের মতে, জমির উপরিভাগের চার থেকে ছয় ইঞ্চি (টপ সয়েল) গভীরের মাটিতেই মূল পুষ্টিগুণ থাকে। মূলত মাটির এই স্তরে ফসল উৎপাদিত হয়। মাটির এই স্তর কেটে নেওয়ায় জমির উর্বরাশক্তি নষ্ট হয়। এজন্য অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করেও কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যায় না। তা ছাড়া কৃষিজমি ওপরের এ টপ সয়েল হারিয়ে ফেললে তা স্বাভাবিক হতে প্রায় ১০-১২ বছর লাগে।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, যেসব জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে তার পাশের জমিগুলোতেও কয়েক বছর ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে না। আমরা এই দুই ইটভাঁটা মালিক গুলোর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি। প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দ্রুত মাটি ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে মাটি ব্যবসায়ী রমজান এবং মুক্তার ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। ইটভাটার মালিক রাসেল বলেন, মাহিন্দ্র ট্রাক্টর করে জমির মাটি আশা ইটভাটা নেওয়া হচ্ছে বলে স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে নবাগত সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা ছিলো না। খবর নিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।
আমার বার্তা/মো. রিমন খান/এমই