জাইকার দেয়া ঋণ পরিশোধের মেয়াদ শুরু হলেও শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু করতে পারছে না সরকার। উন্নতমানের সেবাই শুধু নয়, আয়ের জন্য হলেও দ্রুত এই টার্মিনালের কার্যক্রম শুরুর পরামর্শ খাত সংশ্লিষ্টদের। সেবা প্রত্যাশীরা মনে করছেন, টার্মিনালটি চালু হলে বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাড়বে সুনাম। ভোগান্তি কমবে সবক্ষেত্রে। তবে এ বিষয়ে নির্ধারিত কোনো সময় জানাতে পারেনি সিভিল এভিয়েশন।
চলতি বছর শেষেও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হওয়ার বিষয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। নান্দনিক ও আধুনিক সুবিধাযুক্ত এই টার্মিনাল সেবার লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে সফট ওপেনিং করা হয় ২০২৩ সালের অক্টোবরে। আশ্বাস দেয়া হয়, এক বছর পরই ২০২৪ সালের অক্টোবরেই অপারেশনে যাবে টার্মিনালটি। কিন্তু প্রায় দুই বছর পার হতে চললেও চালু করার কোনো প্রস্তুতি নেই কর্তৃপক্ষের।
অপেক্ষার পালা কবে শেষ হবে, প্রশ্ন বিমানবন্দর ব্যবহারকারীদের। তারা বলছেন, যাত্রীর চাপ অনেক বেশি। পাশাপাশি বিদেশ থেকেও বড় বড় বিনিয়োগকারীরা আসছেন। তবে সেই অনুযায়ী সেবা দিতে পারছে না বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। দ্রুত তৃতীয় টার্মিনাল চালু করা জরুরি।
এদিকে টার্মিনালটি নির্মাণে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকার দেয়া ১৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তার কিস্তি শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকেই। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কিস্তি পরিশোধ এক বছর পিছিয়ে দেয়া গেলেও, চলতি বছরেও টার্মিনালটি চালু হওয়ার বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।
দ্য বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল হক বলেন, গত প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে শুনছি জাপানিজ কনসোর্টিয়ামকে পরিচালনার কাজ দেয়া হবে। তবে অপারেটিং প্রতিষ্ঠান এখনো ঠিক না হয়ে থাকলে, তারা হঠাৎ করে এসে কিভাবে কাজ করবে? তাদেরকেও তো সুযোগ দিতে হবে।
বাংলাদেশ বিমানের সাবেক পরিচালক নাফীস ইমতিয়াজউদ্দিন বলেন, তৃতীয় টার্মিনালটি চালু করতেই হবে। কারণ এর জন্য নেয়া ঋণ শোধ করতে হবে। অপারেট না করা গেলে টাকা আসবে কোথা থেকে?
এভিয়েশন সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ বাড়লেও নতুন টার্মিনাল কবে চালু হবে, তার নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ জানাতে পারেনি সিভিল এভিয়েশন। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, ‘যতদ্রুত সম্ভব দায়িত্ব বুঝে নিয়ে অপারেশনাল মেইনটেন্সে যাওয়া যায়, তার জন্য চেষ্টা চলছে। তবে এখনই নির্দিষ্ট করে দিনক্ষণ বলা যাচ্ছে না।’
তথ্য বলছে, তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনায় জাপানিজ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে সিভিল এভিয়েশনের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, প্রায় ৬ হাজার জনবল নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, মেশিন টু মেশিন ক্যালিব্রেশন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গ্রাউন্ড সার্ভিসসহ বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত না হওয়ায় চালুর সিদ্ধান্তে যেতে পারছে না সিভিল এভিয়েশন।
আমার বার্তা/এল/এমই