হাস্যরসাত্মক ভিডিও, নাটক ও শর্ট ফিল্ম তৈরি করে আলোচনায় ‘প্রাংক কিং প্রোডাকশন’। এই প্রোডাকশনের হাত ধরে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন অনেক অভিনয়শিল্পী। কিন্তু সম্প্রতি এই হাউজটিকে ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন। বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির কর্নধার আর্থিক সজীবের বিরুদ্ধে।
কর্নধার আর্থিক সজীবের নামে অভিযোগ এনেছেন প্রোডাকশনের সাবেক দুই অভিনেত্রী সামিয়া ও তিথি। তাদের দাবি, সজীব বিবাহিত হলেও এ প্রোডাকশনের বর্তমান অভিনেত্রী শায়লা সাথীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে আছেন।
সময় সংবাদের কাছে অভিনেত্রী সামিয়া সুলতানা বলেন,
ছোটবেলা থেকে সজীব ও আমি একসাথে বড় হয়েছি। সজীব ধীরে ধীরে আমার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। গত ১০ বছর ও আমাকে ব্যবহার করেছে। ঢাকায় যখন শায়লা সাথী প্রথম আসে তখন দেড় মাস আমার বাসাতেই ছিল। যখন ওর সাথে সজীবের সম্পর্ক শুরু হলো তখন থেকে আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে। আমাকে শুটে নেয় না। এই সাথীর কারণেই মামুন, ফারুক, তামিম, সিয়াম সবাই শুটিং থেকে বাদ পড়েছে। এখন আরোহী মিমকে বাদ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে কথা বলতে প্রাংকিংয়ের সাবেক অভিনেত্রী তিথীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ব্যস্ততার অজুহাতে বারবার এড়িয়ে যান। যদিও তিনি নিজেই উদ্যোগী হয়ে তথ্য দিতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী বলছেন অভিযুক্ত সজীব?
সময় সংবাদের কাছে সজীব বলেন,
আসলে এদের মূল উদ্দেশ্য হলো ‘প্রাঙ্ক কিং’কে ধ্বংস করে দেয়া। যেসব অভিনয়শিল্পী এ প্রতিষ্ঠান থেকে চলে গেছে সেসব কারণ যদি আমি আজ বলি তবে তাদের পায়ে নিচে মাটি থাকবে না।
সজীব আরও বলেন,
সামিয়া নিজে থেকেই এখানে অভিনয় করতে চেয়েছে। তিনি এক সন্তানের মা। অভিনয়ে ডাউন। এখন সে মিরাজের নায়িকা হতে চায়। আমি সেটা চাইনি।
সাথীর সাথে সম্পর্ক থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
আমার সাথীর সাথে এ ধরনের কোনো সম্পর্কই নেই। টিম মেম্বারদের সাথে যেমন সম্পর্ক, সাথীর সাথেও তেমনি সম্পর্ক আমার।
একই কথা বলেছেন আর্থিক সজিবের স্ত্রী ও অভিযুক্ত শায়লা সাথী। তাদের দাবি, এই অভিযোগ একটি সুপরিকল্পিত অপপ্রচার। প্রাংক কিংয়ের বর্তমান অভিনেতা-অভিনেত্রীদের একাংশও সজীব ও সাথীর পক্ষেই কথা বলছেন। তারা বলছেন, সামিয়া ও তিথির অভিযোগ সাজানো এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন অভিনেত্রী আরোহী মিম। তার অভিযোগ, সাথী প্রোডাকশনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অন্যদের প্রতি অবিচার করছেন। আরোহী মিম বলেন,
আমি এ দলে ৫ বছর ধরে কাজ করছি। সজীব ভাইয়ের চারিত্রিক বিষয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, আমি মনে করি সেগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। তবে হ্যাঁ, সাথী এ দলে নানারকম পলিটিক্স শুরু করেছে। এবং ওর জন্য দলের অনেক সদস্য সমস্যায় পড়েছেন এ বিষয়গুলো সম্পূর্ণ সত্যি।
তবে পুরো কাহিনীতে নতুন মোড় এনে দেয় অভিযোগকারী সামিয়ার মামা’র বক্তব্য। তিনি জানান, এই বিরোধের পেছনে রয়েছে সম্পত্তিগত দ্বন্দ্ব। সামিয়ার মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন,
সজীবের নামে যে কথা আমার ভাগ্নী সামিয়া বলছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট। আসলে জমি নিয়ে মামলা চলছে। সে মামলায় জমির অংশীদার তারা। সে কারণেই সজীবকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এমনটা করছে সামিয়া।
এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে প্রাংক কিং প্রোডাকশন। নাটকের এই ইউনিট যেন কোন
সাসপেন্স নাটকের অংশ হয়ে উঠছেন। শেষ পর্যন্ত দোষী কে সেটা এই মুহুর্তেই বলা যাচ্ছে না। তবে, এই নাটকের শেষটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রাংক কিং প্রেমীরা।
আমার বার্তা/এল/এমই