বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আজকে আমরা যেখানেই যাই, শুনি একটি সংগঠনের লোক তারা সেখানে বসে আছে। ডিসি কে? তারা বলছে এইটা একটি বিশেষ দলের লোক। ওরা ডিসিগিরি করছে না ওইখানে তারা তাদের সংগঠনের কাজ করছে।
তিনি বলেন, আমি এমনও শুনেছি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যিনি ডিজি তিনি তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে বলেছেন তোমরা রুকন না হলে চাকরি থাকবে না, এটা একদম সত্য কথা। আজকে আমাকে বলেছে, আমি আপনাদের সামনে কোনও মিথ্যা কথা বানিয়ে বলছি না। এইজন্য কি আহনাফ, মুগ্ধ, আবু সাঈদ, ওয়াসিম শেখ হাসিনার পুলিশের গুলিতে জীবন দিয়েছে? নিজের শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে পুলিশের গুলি বরণ করে নিয়েছে এই গণতন্ত্রের জন্য? একটি রাজনৈতিক চেতনার রংয়ে আমাদের প্রশাসন থাকবে, শেখ হাসিনা যে চেতনা তৈরি করেছিলেন সেই পাঁতানো চেতনার জন্যই কি এত রক্তপাত, এত হানাহানি? শেখ হাসিনা যেমন তার অপশাসনের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই বলতো একে ধরো, এদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দাও। আবার নতুন করে আমরা দেখছি, অন্য চেতনা ধর্মের নামে। যে রুকন না হলে চাকরি করতে পারবে না।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদ ও আহতদের স্মরণে ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আমাদের অনেকেই উপদেষ্টার পদ পেয়েছেন, অনেকেই ভালো আছেন। তাহলে কি আবার নতুন করে নতুন আঙ্গিকে শেখ হাসিনার যে অপশাসন, দুঃশাসন এবং চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, টাকা লুট, চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য, চাকরি বাণিজ্য, এসবের কি আবার পুনরাবৃত্তি মানুষ দেখতে চায়? এই জন্য কি প্রায় দেড় হাজারের মতো শিশু-কিশোর তরুণ-শ্রমিক-রিকশাওয়ালারা জীবন দিয়েছে? এই উপলব্ধি তো সবার হওয়া উচিত।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এখনও তো নির্বাচন হয়নি। কে ক্ষমতায় যাবে, জনগণ কাকে ভোট দেবে, এটা তো এখনও নির্দিষ্ট হয়নি। তাহলে এই কথাগুলো এখনই কেন আসছে? এগুলো কেন আমাদের শুনতে হচ্ছে? অনেক সরকারি দফতর থেকে অনেকেই আসছে তারা বলছেন আমরা কী করব ভাই, আমরা যদি ওই দলের সদস্য-রুকন না হই, আমরা তো চাকরি করতে পারব না। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার ভূত, তার আত্মারা আবার নতুন করে নতুন কায়দায় নতুন চেতনায় তারাই আবার ভর করেছে। এটার জন্য তো এই ছেলেরা জীবন দেয়নি।
রিজভী আরও বলেন, আমরা সেই গণতন্ত্র চেয়েছি, যে গণতন্ত্রে এই দেশের ভোটাররা ভোট দিয়ে যাকে ইচ্ছা তাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাবে। এই জন্যই আমাদের লড়াই, এজন্যই আমাদের এত সংগ্রাম, এত ত্যাগ। এই জন্যই স্কুল-কলেজের ছেলেরা এত রক্ত দিয়েছে, নিজেদের জীবন দিয়েছে। এখানে এক চেতনাধারী বিদায় নিয়ে আরেক চেতনাধারী ক্ষমতার মধ্যে বসবে এটা তো জনগণ প্রত্যাশা করে না। বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে সেই চেতনাধারীরা, তাদের লোক হতে হবে, তাদের লোক ছাড়া কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে এপয়েন্টমেন্ট হবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবে না, কোনও চাকরি হবে না। আবার সেই এক মাত্রিক একটি দেশ গড়ার প্রচেষ্টা চলছে, গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রের জন্য তো দীর্ঘ ১৬ বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া লড়াই করেননি, এইজন্য গোটা দেশকে সংগঠিত করেননি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সংগঠনের সভাপতি মীর সরফৎ আলী সপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম, সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ প্রমুখ।
আমার বার্তা/এমই