জুলাই গণঅভ্যুত্থান শহীদদের স্মরণে ঘোষিত ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী মাহমুদুর রহমান বলেছেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে না পারা অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।”
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এবি পার্টির আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন, সেই মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর প্রধান উপায় হলো—এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলা, যেখানে আর কখনো হাসিনার মতো ফ্যাসিবাদ চেপে বসতে না পারে।”
তিনি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ন্যাশনাল অম্বুডসম্যান পদের প্রস্তাব দেন এবং বলেন, “রাজনীতিতে দিল্লির মতো কোনো বিদেশি শক্তি যেন আর বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, সে বিষয়ে রাজনৈতিক নেতাদের সচেতন থাকতে হবে।”
এ সময় তিনি সংবিধানের সত্তুর অনুচ্ছেদ সংশোধন, প্রধানমন্ত্রীকে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদ বা ১০ বছরের মধ্যে সীমিত রাখার প্রস্তাব ও মেয়াদ শেষে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের অযোগ্যতা নিশ্চিত করার ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্যকে স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু সভাপতিত্ব করেন এবং কর্মসূচির উদ্বোধন করেন শহীদ নাজমুল কাজীর স্ত্রী মারিয়া সুলতানা রাখি ও কন্যা আরিয়ানা কাজী নুজাইরাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আব্দুল লতিফ মাসুম। তিনি বলেন, “হাজারো শহীদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ চাই—যেখানে বিভেদ-দলাদলি নয়, ঐক্য ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে।”
সভাপতির বক্তব্যে মঞ্জু বলেন, “গণঅভ্যুত্থান ছাড়া বাংলাদেশ পরিবর্তন সম্ভব নয়। তরুণরাই এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেবে, সেটি মাহমুদুর রহমান বহু আগে বলেছিলেন। আজ তাঁর কথাই সত্য প্রমাণিত হয়েছে।”
শহীদ নাজমুল কাজীর স্ত্রী মারিয়া সুলতানা রাখি বলেন, “আমি যখন হাসপাতালে গিয়েছি, লাশের সারি দেখেছি। হাজারো মানুষ স্বজন হারিয়েছে। এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আর কোনো ফ্যাসিবাদ চাই না।”
আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, বিএম নাজমুল হক, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, এবিএম খালিদ হাসান, ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি, আমিনুল ইসলাম এফসিএ, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, যুবপার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন এবং নারী বিষয়ক সম্পাদক ফারাহ নাজ সাত্তার।
এবি পার্টি জানায়, তাদের ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচিতে থাকছে আলোচনা সভা, পথনাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শহীদ পরিবারগুলোর সম্মাননা প্রদান।
আমার বার্তা/এমই