বাংলাদেশ পুলিশ সম্প্রতি নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে একটি ২৪ ঘণ্টা হটলাইন সেবা চালু করেছে। এই হটলাইনের নম্বরগুলো হল ০১৩০০০২০০১, ০১৩০০০২০০২ ও ০১৩০০০২২২২। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো নারীদের নির্যাতন, নারীর প্রতি আক্রমণাত্মক ভঙ্গি, কটূক্তি, ইভ টিজিং, হেনস্তা ও যৌন হয়রানির ঘটনাগুলো দ্রুত রিপোর্ট করে তৎক্ষণাৎ সহায়তা প্রদান করা , ।
এই পদক্ষেপটি নারীর প্রতি সহিংস আচরণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে শূন্য সহ্যশক্তির নীতিকে সামনে রেখে গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, হটলাইন নম্বরের মাধ্যমে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে নির্যাতনের তথ্য পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাইবার অপরাধের শিকার নারীদের আইনি সহায়তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পূর্বে চালু থাকা সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন ফেসবুক পেইজের কার্যক্রমও চলমান থাকবে , ।
জনগণের প্রত্যাশা ও সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া
প্রাথমিক পর্যায়ে, জনগণের মধ্যে এই হটলাইনকে বেশ ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করার প্রত্যাশা রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন—
সহায়তার সহজলভ্যতা: ২৪ ঘণ্টা সেবা নিশ্চিত থাকায়, যেকোনো সময়ে নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে দ্রুত পুলিশী ব্যবস্থা গ্রহণের আশা করা হচ্ছে।
নিরাপত্তা ও আইনি সহায়তা: নির্যাতনের শিকার নারীরা আশাবাদী যে, এ ব্যবস্থা তাদের আইনি সহায়তা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাবে।
সতর্কতা ও প্রতিরোধ: অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে, কিছু অংশে জনগণ কিছুটা সতর্কতাও প্রকাশ করতে পারে। যেমন, তথ্য যাচাই ও প্রমাণ সংগ্রহের প্রক্রিয়া কখনও কখনও বিলম্বিত হলে তা হটলাইনের কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, সঠিক ও কার্যকর বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে পুলিশ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য , ।
ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি
এই হটলাইন সেবার সফলতা ও জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য, কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত ফিডব্যাক সংগ্রহ করে সেবা প্রসারিত ও উন্নত করতে হবে। তথ্যের দ্রুততা, সঠিক তদন্ত এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ—এসব বিষয় নিশ্চিত হলে, জনগণ এই উদ্যোগকে আরও প্রশংসাসূচক দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করবে। একই সাথে, সাইবার অপরাধের শিকার নারীদের সহায়তার জন্য অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ হলে, এটি সমাজে নারী নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে এই নতুন হটলাইন সেবা, পুলিশ কর্তৃপক্ষের দিক থেকে একটি প্রগতিশীল পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে জনগণ এই সেবাকে সমর্থন জানালে, এর কার্যকারিতা ও সফলতা সমাজে নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
লেখক : শিক্ষার্থী, গণিত বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।