বিভিন্ন দাবিতে গণছুটির ঘোষণা দেওয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আন্দোলনরত কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেছেন, পল্লী বিদ্যুৎ সচল রাখার জন্য আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা আছে। হাজার হাজার লোক কাজ করতে আসছে। আমরা পুরোনোদের নিয়েই কাজ করতে চাই। তবে কেউ নাশকতা করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে এক সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কিছু দাবি যৌক্তিক। সামনে নির্বাচন, কিন্তু সবাই নির্বাচন চায় তা না। যারা চায় না, তারাও এই আন্দোলনে থাকতে পারে বলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তথ্য দিয়েছে। আমরা তা মনে করতে চাই না। হয়তো ভুল বোঝাবুঝির কারণে তারা কাজের বাইরে আছেন। যদি ফিরে না আসেন, তাহলে ধরে নেব এর পেছনে কারও ইন্ধন আছে।
উপদেষ্টা জানান, আন্দোলন শুরু করার পর কিছু কর্মকর্তাকে বদলি করা হয় এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এরপর মে মাসে তারা আবার আন্দোলনে নামে। পরে দুটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩০২৯ জনকে বদলি করা হয়েছিল, যার মধ্যে কিছু রুটিন বদলিও ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার কথা বলা হয় এবং এরই মধ্যে ৮০৩ জনকে পূর্বের কর্মস্থলে বহাল করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তাদের আরেকটি দাবি ছিল যে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ৩৬৪টি বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। এখানে কর্মী বেশি, তাই মামলার সংখ্যাও বেশি। অন্যদিকে, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে (আরইবি) মামলা হয়েছে ৬৪ জনের বিরুদ্ধে। আন্দোলনকারীদের এই দাবি সঠিক নয়। আরইবির কেনাকাটায় দুর্নীতির বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে।
ফাওজুল কবির বলেন, গণছুটির কর্মসূচি ঘোষণার পর একটি নোটিশ দেওয়া হয়। এরপর অনেকেই কাজে ফিরেছেন। আরও অনেকে ফিরতে চান, কিন্তু কেউ কেউ বাধা দিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তিনটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। গণছুটির ফলেও বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সমস্যা হয়নি। আন্দোলনরতদের সব দাবি আমরা বিবেচনা করছি। কিন্তু ছুটিতে থেকে কাজে বিঘ্ন ঘটালে তাদের দাবি বিবেচনা করা সম্ভব হবে না। সরকার এ বিষয়ে যথেষ্ট সহনশীলতা দেখাচ্ছে।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনো বৈঠক হবে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, যে ছুটিতে আছে, তার সঙ্গে কিসের বৈঠক? ছুটি থেকে ফিরে আসুক, তারপর বৈঠক হবে। তাদের শৃঙ্খলার মধ্যে আসতে হবে। তারা কাজে যোগ না দিলে আমরা বিকল্প ব্যবস্থা নেব। তারা বৃহত্তর বিদ্যুৎ পরিবারের অংশ, তাই আমরা তাদের সুযোগ দিতে চাই এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাই।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভবিষ্যৎ কাঠামো নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমিতিগুলোকে কোম্পানিতে রূপান্তর করা যায় কিনা, সে বিষয়েও ভাবা হচ্ছে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, যার জন্য আইন ও বিধি সংশোধন এবং সম্ভাব্যতা যাচাই করা প্রয়োজন।
আমার বার্তা/এমই