ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্য ছত্তিশগড়ে মাওবাদী বিদ্রোহীদের রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ৯ সদস্য নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) ছত্তিশগড়ের বিজাপুর জেলায় মাওবাদী বিদ্রোহীদের পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গাড়ি উড়ে যায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, বিস্ফোরণে রাস্তায় গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দশক ধরে চলা মাওবাদীদের বিদ্রোহে দেশটিতে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। মাওবাদী বিদ্রোহীরা ভারতের খনিজ-সমৃদ্ধ মধ্যাঞ্চলীয় ওই রাজ্যের প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকারের জন্য বছরের পর বছর ধরে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে ছত্তিশগড়ে অন্তত ২৮৭ বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। রাজ্যটিতে দেশটির সরকারি বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে চলা সশস্ত্র সংঘাত দমনের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে।
সোমবার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ছত্তিশগড়ে মাওবাদী বিরোধী অভিযান থেকে ফেরার সময় হামলার ওই ঘটনা ঘটেছে। এর আগে, শনিবার ওই রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মাওবাদী বিদ্রোহীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত চার বিদ্রোহী ও পুলিশের একজন কর্মকর্তা নিহত হন।
রাজ্য পুলিশের মাওবাদী বিরোধী অভিযানের প্রধান বিবেকানন্দ সিনহা বলেছেন, ‘‘আজ অভিযান থেকে ফেরার পথে রাস্তায় পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইনের বিস্ফোরণে নিরাপত্তা বাহিনীর আট সৈন্য ও একজন চালক নিহত হয়েছেন।’’
চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৭ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহীরা। আদিবাসী অধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পক্ষে লড়াইয়ের দাবি করা মাওবাদীরা নকশাল নামেও পরিচিত। গত বছর দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অন্তত এক হাজার সন্দেহভাজন নকশালপন্থীকে গ্রেপ্তার করেছে। একই সময়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে আরও ৮৩৭ মাওবাদী বিদ্রোহী।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত সেপ্টেম্বরে মাওবাদী বিদ্রোহীদের ‘আত্মসমর্পণ’ অথবা ‘সর্বাত্মক হামলার’ মুখোমুখি হওয়ার জন্য সতর্ক করে দিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ২০২৬ সালের প্রথম দিকেই মাওবাদী বিদ্রোহ দমনের আশা করছে। -- সূত্র: এএফপি
আমার বার্তা/এমই