স্থায়ীত্বের কোনো নিশ্চয়তা নেই– এমন বাস্তবতায় দ্রুত টানা ৯ মাসের বেতন বকেয়া, বকেয়া বেতন পরিশোধসহ তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে দেশের হাজারো কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) কর্মীরা।
তাদের দাবি, কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রাস্ট আইন ২০১৮ অনুযায়ী ট্রাস্টের আওতায় সব পদে নিয়োগ স্থায়ী করতে হবে এবং আইনের ২৪(ঙ) ধারা বাস্তবায়ন করে ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে। একইসঙ্গে দ্রুত বকেয়া বেতন পরিশোধের আহ্বান জানান তারা।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর মহাখালীর বিএমআরসি ভবনের সামনে বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। মানববন্ধনে সিএইচসিপি কর্মীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, ব্যানার নিয়ে অংশ নেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন নেতারা।
সিএইচসিপি কর্মীরা বলছেন, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ২০১১, ২০১৫, ২০১৮ ও ২০২২ সালে ধাপে ধাপে মোট ১৩ হাজার ৯৪৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ এখনো তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ হয়নি।
এমনকি ২০১৮ সালের কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রাস্ট আইন অনুযায়ী ২৪(ঙ) ধারা অনুসারে প্রভাষকদের, সহকারীদের, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রাস্ট কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
তাদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য খাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করেও তারা অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। কিন্তু এসব সমস্যা নিয়ে বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েও কোনো ফল পাননি সিএইচসিপি কর্মীরা।
রাসেল আহমেদ নামের এক সিএইচসিপি কর্মী বলেন, আমরা জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করি, অথচ নিজেরাই বছরের পর বছর বেতন বঞ্চিত থাকি। ট্রাস্ট আইন অনুযায়ী আমাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা শুধু দাবি আদায়ের জন্য নয়, স্বাস্থ্য খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার জন্যও লড়াই করছি।
তিনি আরও বলেন, গত মাসের শেষের দিকে আমাদের মধ্য থেকে ১৩ হাজার ২৮৯ জন সাড়ে তিন মাসের বেতন-বোনাস পেলেও আমরা ২০২২ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ৬৯৭ জন সিএইচসিপি এবং ১২ জন হেড অফিসের কর্মী বেতন পাইনি। দীর্ঘ সাড়ে ৯ মাস যাবত বেতন না পাওয়ায় আমরা পরিবার নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছি। বেতন না পাওয়ায় আমরা ঈদের আনন্দ থেকেও বঞ্চিত হয়েছি।
বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলেন, আমরা নিয়মিত কাজ করছি, স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রাখছি অথচ ৯ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। আইনের তোয়াক্কা না করে আমাদের মতো হাজার হাজার কর্মীকে অনিশ্চয়তায় রাখা হয়েছে। আমরা চাই আমাদের চাকরি স্থায়ী করা হোক এবং বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ করা হোক।
আমার বার্তা/এল/এমই