হযরত শাহজালাল, শাহ আমানত ও সৈয়দপুর— দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইজারায় পরিচালিত ১৬টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আজ (সোমবার) মধ্যরাতেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের ইজারা নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বেবিচকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যাত্রীসেবার মান উন্নয়ন, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, যেসব প্রতিষ্ঠানের ইজারার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, তাদের আর নবায়নের সুযোগ দেওয়া হবে না এবং আগামীতে নতুনভাবে এসব স্থাপনা ব্যবহারের জন্য নতুন নীতিমালার আওতায় কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে যেসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আজ রাতেই বন্ধ হচ্ছে সেগুলো হলো— এরোস ট্রেডিং, মেসার্স সজল এন্টারপ্রাইজ, মাহবুবা ট্রেডার্স, নাহার কনস্ট্রাকশন, এভিয়েশন ট্রান্সপোর্ট লিমিটেড, এ ফাইভ রোডওয়ে লিমিটেড, ওয়ার্ল্ড ট্রাস্ট ট্যুরিস্ট কার সার্ভিসেস কোম্পানি, শিরিন এন্টারপ্রাইজ, হাওলাদার অ্যান্ড সন্স, অথৈ এন্টারপ্রাইজ, ওল্ফ করপোরেশন, আড়িয়াল ক্রিয়েটিভ স্পেস, ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশন এবং ডিপার্টমেন্ট এস কনসালটিং।
এছাড়া চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রী প্রান্তিক ভবনের দ্বিতীয় তলার বহির্গমন এলাকায় অবস্থিত ফ্যালকন এজেন্সি এবং নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ বহির্গমন এলাকায় থাকা ফ্যালকন এয়ারপোর্ট সার্ভিস টিমের কার্যক্রমও আজ রাত থেকে বন্ধ হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানকেও চূড়ান্তভাবে কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল ২৯ জুন বেবিচক থেকে ইজারা গ্রহণকারী সব প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত ডাকযোগে চিঠি পাঠিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। পাশাপাশি ৩০ জুন সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে একটি আনুষ্ঠানিক নোটিশও জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এসব প্রতিষ্ঠানকে অপসারণ করতে হবে এবং নতুন করে ইজারা নবায়নের জন্য কোনো আবেদন বিবেচনায় আনা হবে না।
বেবিচক বলছে, বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনায় আরও আধুনিকতা, জবাবদিহিতা এবং যাত্রীসেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ। ভবিষ্যতে এসব স্থানে নতুন নীতিমালার ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, অনেক প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর ধরে একই ইজারায় কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও যাত্রীসেবা ও নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে। এসব বিবেচনায় নিয়েই এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মূলত, বিমানবন্দরের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় নিয়ন্ত্রিত ও প্রাতিষ্ঠানিক সেবা নিশ্চিতে বাণিজ্যিক কার্যক্রমেও নতুন করে শৃঙ্খলা আনতে চায় কর্তৃপক্ষ। রাত থেকেই শুরু হচ্ছে সেই বাস্তবায়ন।
আমার বার্তা/এমই