চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশিদের ইজারা প্রদানের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বাম সংগঠনসমূহের উদ্যোগে আয়োজিত শনিবার (২৮ জুন) রোডমার্চ কর্মসূচি চলাকালে, পেশাগত দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় দৈনিক যায়যায়দিন-এর চট্টগ্রাম মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদক এবং চট্টগ্রাম মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স ইউনিটি (সিএমআরইউ)-এর সদস্য সাহিদুল ইসলাম মাসুম-এর উপর অতর্কিত হামলা এবং শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে সাংবাদিক সমাজ।
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে আজ রবিবার (২৯ জুন) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সিএমআরইউ’র উদ্যোগে আয়োজিত হয় এক প্রতিবাদী মানববন্ধন। সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন ও হয়রানির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এই মানববন্ধন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে এক জোরালো বার্তা হিসেবে প্রতিভাত হয়।
মানববন্ধনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি। তিনি বলেন, “গণমাধ্যমকর্মীরা যখন পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন, তখন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। মাসুমের উপর হামলা শুধু একজন সাংবাদিক নয়, পুরো গণমাধ্যমের উপর আঘাত। দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপকর্ম করার সাহস না পায়।”
সিএমআরইউ’র সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ টাইমস-এর মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, “মাসুম ভাইয়ের ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগেও একাধিকবার গণমাধ্যমকর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। বারবার আমরা অবমাননার শিকার হচ্ছি। আজকের মানববন্ধন থেকে আমরা তিন দফা দাবি জানাচ্ছি: ১. গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ২. হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে ৩. সাংগঠনিকভাবে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, অন্যথায় আমরা আরো কঠোর কর্মসূচির দিকে যাব।”
সমাপনী বক্তব্যে সিএমআরইউ’র সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠ-এর মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আবির আহমেদ বলেন, “গতকাল সাহিদুল ইসলাম মাসুমের উপর ঘটে যাওয়া হামলা ন্যাক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বাম সংগঠনগুলোকে স্পষ্ট বার্তায় জানিয়ে দিতে চাই—আপনাদের সংগঠনের নেতাকর্মীরা যদি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ আপনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। একইসাথে সরকারের প্রতি আহ্বান—দ্রুত সময়ের মধ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।”
এই মানববন্ধনে সিএমআরইউ’র সকল সদস্যসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তারা সম্মিলিত কণ্ঠে বলেন, “গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ নয়, বরং তাকে মুক্ত ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।”
সিএমআরইউ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে অগ্রগতি না দেখা গেলে বৃহত্তর সাংবাদিক সমাজকে সাথে নিয়ে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।