অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, বহির্বিশ্বের চেয়ে বাংলাদেশের ভ্যাট ট্যাক্স আদায় কম। দেশের উন্নয়নে রাজস্ব বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। আর বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে হলে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী সবাইকে ট্যাক্স দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) নগরীর বরিশাল ক্লাব কনফারেন্স কক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের আয়োজনে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, উন্নত বিশ্বের সাথে তুলনা করলে ইউরোপ ৪৫ ভাগ, আমেরিকা ৩৫ ভাগ, জাপান ২৪ ভাগ আদায় হয়। আর বাংলাদেশের আদায় হয় ৭ ভাগের সামান্য বেশি। এ কারণে আমাদের ঋণ করতে হয়। বিশাল জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণে অর্থ প্রয়োজন। তাই রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ ঋণগ্রস্ত জাতি হয়ে যাচ্ছে। বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছেই।
তিনি বলেন, অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়াকে আরও সহজ করা হচ্ছে। আয়কর বিভাগের কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারী যদি দুর্নীতির আশ্রয় নেয় কিংবা কেউ হয়রানি হলে অনলাইনে অভিযোগ করার আহ্বান জানান তিনি।
আবদুর রহমান খান বলেন, একেকজনে একেক রকম নয়, সবাইকে একই প্রক্রিয়ায় ভ্যাট আইন সিস্টেমকে পুনর্গঠন করতে চায় এনবিআর।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এবায়দুল হক চান। সভায় এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও বিভাগের ৬ জেলার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় ব্যবসায়ীরা ট্যাক্স, ভ্যাট প্রদানে হয়রানি বন্ধ ও ব্যবসায়ীরা নানা দাবি তুলে ধরেন।
এর আগে, বরিশাল সার্কিট হাউজে বিভাগীয় প্রশাসনের আয়োজনে মতবিনিময় সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, বাজেট অর্থনীতির প্রাণ। এর মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। রাষ্ট্র পরিচালনায় আয় ও ব্যয়ের হিসাব বাজেটের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের ব্যয় মেটানোর জন্য আর্থিক উৎসের অন্যতম প্রধান হলো কর। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ীবৃন্দ এবং কর প্রদানে যোগ্য সকল নাগরিককে নিয়মিত কর প্রদান করতে হবে। এলক্ষ্যে কর প্রদানের পদ্ধতি সহজীকরণ ও ট্যাক্স ভীতি দূরীকরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আইন প্রয়োগের মাধ্যমে কর আদায় করা যায়। সরকার চায় আইন প্রয়োগ না করে করদাতাদের উৎসাহ ও কর প্রদানের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করে, তা আদায় করা হোক। এসময় জনগণের প্রদেয় কর রাষ্ট্রের এবং তাদের সেবার জন্যই ব্যয় করা হয় সে বিষয়েও জনগণকে আরও বেশি জানাতে হবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য এ কে এম বদিউল আলম ও হোসেন আহমদ, রেঞ্জ ডিআইজি মো. মঞ্জুর মোর্শেদ আলম, মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। এ ছাড়া বিভাগীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উন্মুক্ত আলোচনায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা বাজেট সম্পর্কিত তাদের মতামত, সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা উপস্থাপন করেন।
আমার বার্তা/এমই