ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ঐতিহ্যগতভাবেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
শনিবার (২৩ আগস্ট) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কালো দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সভায় ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। এই বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহ্যগতভাবেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদ যখন উচ্চারিত হয়, তখন তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি মানুষের গভীর বিশ্বাসেরই প্রতিফলন।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় আমরা সবসময় দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধ থেকেছি। এ ঐতিহ্যের দায় আমাদের সবার। ভবিষ্যতেও যদি একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়, ডাক পড়লে আমরা আবারও ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করব।
২০০৭ সালের ২৩ আগস্ট স্মরণ করে উপাচার্য সেই সময় আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানান।
সেনাবাহিনী ও পুলিশ দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে উপাচার্য আরও বলেন, তারা আমাদের প্রতিপক্ষ নয়। আমরা পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে যার যার জায়গা থেকে দেশের জন্য কাজ করব।
সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় যারা আন্দোলন করেছেন তাদের আমরা স্মরণ করছি। শিক্ষকরা আন্দোলনে সবসময় শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাল হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন।
তিনি বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময়ই সব অংশীজনের পরামর্শে এগিয়ে গেছে এবং এই চর্চা অব্যাহত থাকবে।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, ২০০৭ সালের আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদার ওপর আঘাত এসেছিল। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি দেশের মানুষের ছিল প্রবল আকাঙ্ক্ষা ।
তিনি বলেন, তখন দেশের মানুষ সবচেয়ে বড় সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দিকে তাকিয়ে ছিল। আমরা আন্দোলন করেছি এবং দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলাম।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আজকের আয়োজন হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা প্রতিষ্ঠায় যারা আন্দোলন করেছেন তাদের স্মরণ করার অনুষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের স্বকীয়তা না থাকলে শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন সম্ভব নয়। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলাম।
আমার বার্তা/এল/এমই