ফুটবল খেলতে এসে মারামারি করাটা শৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে না। তার পরও খেলোয়াড়রা উত্তেজনাবশত মারামারিতে জড়িয়ে যান। তারপরও এসব দেখে অভ্যস্ত যে কোন দেশের ফুটবল দর্শক। খেলোয়াড়রা মারামারি করেন, শাস্তি পান, আবার মিলেও যান।
কিন্তু এসব ছাপিয়ে যখন একজন ফুটবলার ম্যাচ কমিশনারের গায়ে হাত তোলেন সেটি সব দিক থেকে লজ্জাজনক। বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার সাদ উদ্দিন সেটাই করেছেন। সাদের এহেন ঘটনায় তাকে শোকজ করা হয়েছিল। তারপর সাদকে ছয় ম্যাচ বহিষ্কার করা হয়েছে। পরশু হওয়া ডিসিপ্লিনারি কমিটির সিদ্ধান্ত সাদ ছয় ম্যাচ বহিষ্কার।
গত ২ মে বসুন্ধরা কিংসের মাঠে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের গুরুত্বপূর্ণ খেলায় বসুন্ধরা ২-০ গোলে আবাহনীকে হারায়। সেই ম্যাচের পর গন্ডগোল হয়। কিংসের টেন্ট থেকে দুই সমর্থক আবাহনীর দিকে আক্রমণ করেছিল। এসব নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা একপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণে চলে আসছিল। তখন সাদ উদ্দিন তার টেন্ট থেকে এসে ম্যাচ কমিশনার সুজিত কুমার ব্যানার্জীকে যা করলেন, রীতিমতো অপমানজনক।
শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার মতোই কাজ করলেন সাদ উদ্দিন। ম্যাচ কমিশনার সুজিত ব্যানার্জী, বেচারা ভদ্র মানুষ। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তার হাতে নেই। বাঁশি বাজিয়েছেন রেফারি সায়মন হাসান সানি। সেটা নিয়েও সমস্যা হয়নি। কিন্তু পুরো পরিস্থিতির বাইরে গিয়ে সাদ উদ্দিন ম্যাচ কমিশনারকে ধাক্কা দিয়ে বসলেন। লজ্জায় জিভ কাটা যায়। প্রেসবক্স থেকে দেখে মনে হলো উদ্ভূত পরিস্থিতি আড়াল করতে দ্রুত কিংসের ম্যানেজার ওয়াসিমুজ্জামান সাদকে ধরে সুজিতের সামনে এনে সরি বলতে বললেন।
সুজিতের শরীরি ভাষা দেখে মনে হলো তিনি প্রচণ্ড ক্ষুব্দ। রেগে গিয়ে হাত উঁচু করে সরিয়ে দিলেন সাদকে। এহেন ঘটনায় সেদিন সবার চোখে সাদ হয়ে গেলেন ফুটবলের ব্যডবয়। ডিসিপ্লিনারি কমিটির দেওয়া শোকজের জবাবে সাদ উদ্দিন নাকি উল্লেখ করেছেন, তার মাথা ঠিক ছিল না।' জাতীয় দলে খেলা একজন ফুটবলারের মাথা এত অল্পতে নষ্ট হয়ে যাওয়াটা খোঁড়া যুক্তি মনে করেছে ডিসিপ্লিনারি কমিটি।
ডিসিপ্লিনারি কমিটির আরো একাধিক সিদ্ধান্ত হয়েছে বসুন্ধরা কিংসের মাঠে প্রায় হট্টগোল হচ্ছে। তাদের দর্শক মাঠে নেমে যায়, মারামারিতে জড়াচ্ছে। এসব কারণে কিংসের শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। অনিরাপদের ভেন্যুর অভিযোগ তুলে মোহামেডান-আবাহনী অনেক বার আপত্তি করেছে। শৃঙ্খলা না রাখতে পারার কারণে সৌন্দর্য হারাতে কিংস।
বাফুফের ডিসিপ্লিনারি কমিটি আগামী ছয় ম্যাচ পর্যবেক্ষণ করবে। পুনরায় একই ঘটনা ঘটে তাহলে দর্শক শূন্য মাঠে খেলা হবে। ডিসিপ্লিনারি কমিটির ওপর এই সিদ্ধান্ত নিয়েও কানাঘুষা আছে। একাধিক ঘটনা ঘটেছে কিংস এ্যারেনায়, তারপরও কেন ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
বসুন্ধরা কিংস লিগের স্পনসর বিসিএলের স্পন্সর জাতীয় দলের খেলা হয় ওখানে, অনুশীলন করে জাতীয় দল। নানা কিছু বিবেচনা করে এবারের মতো কঠোর অবস্থানে না যাওয়ার চাপাচাপি ছিল। ডিসিপ্লিনারি কমিটির চেয়ারম্যান মেজবা উদ্দিন জানিয়েছেন, দর্শক শূন্য মাঠে খেলা হওয়ার শাস্তি থাকবে তবে আমরা ছয় ম্যাচ দেখব। তারপরই শাস্তি প্রয়োগ হবে।'
কমিটির সভায় বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে দুই ক্লাবকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। মাঠে ঢুকে রেফারিকে মারাধর করায় শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সিটি ক্লাবকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
আমার বার্তা/জেএইচ