মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টের সবচেয়ে আলোচিত নাম স্যাম কনস্টাস। এই সিরিজেই বেশ আলোচনার জন্ম দিয়ে ন্যাথান ম্যাকসুয়েইনিকে অভিষেক করানো হয়। কিন্তু সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচেই তিনি ছিলেন ব্যর্থ। এরপরেই কনস্টাসকে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচের জন্য উড়িয়ে আনা হয় মেলবোর্নে। আর তাতেই বাজিমাত। অস্ট্রেলিয়া এই ১৯ বছরের তরুণের মাঝেই পেল নতুন আশা।
ওয়ানডে মেজাজে খেলে ৬৫ বলে করেছেন ৬০ রান। তবে রানটাই মুখ্য নয় কনস্টাসের জন্য। যেভাবে খেলেছেন সেটাই আলোচনার খোরাক। জাসপ্রিত বুমরাহর মতো সময়ের সেরা ফাস্ট বোলারকে রিভার্স সুইপে ছক্কা হজম করিয়েছেন। আবার স্কুপ করে বাউন্ডারিও হাঁকিয়েছেন। আর তার ছক্কাটাও আলাদা করেই আলাপের মতো।
কনস্টাসের কল্যাণে ৩ বছর ও ৪৪৮৩ বল পর টেস্ট ক্রিকেটে ছক্কা হজম করলেন বুমরাহ। এরপরেই এলো আরেক আলোচিত মুহূর্ত। বিরাট কোহলির ধাক্কার জবাবে কথা বলেছেন চোখে চোখ রেখে। ৩৬ বছর বয়েসী কোহলি নিঃসন্দেহে কিংবদন্তি পর্যায়ে। কিন্তু, কনস্টাস পিচে এতই দুর্দান্ত তার মনোযোগ সরাতে ধাক্কা দিয়েই মনস্তাত্ত্বিক খেলা খেলতে হয়েছে কোহলিকে।
সেজন্য অবশ্য বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছেন কোহলি। ঘটনাটি ঘটেছে ১০ ওভারের পর। মোহাম্মদ সিরাজ সেই ওভার শেষ করার পর দিক পরিবর্তন করার জন্য হেঁটে আসছিলেন কোহলি। উল্টো দিক থেকে আসছিলেন কনস্টাসও। দু’জনের কাঁধে ধাক্কাধাক্কি হয়। কনস্টাস কিছু একটা বলে বসেন। কোহলিও এগিয়ে যান। দুজনের বিবাদ থামান আম্পায়ার এবং আরেক অজি ওপেনার উসমান খোয়াজা।
১৯ বছরের কনস্টাসকে ধাক্কা দিয়ে সমালোচনায় ৩৬ বছরের কোহলি
১৯ বছরের কনস্টাসকে ধাক্কা দিয়ে সমালোচনায় ৩৬ বছরের কোহলি
রিপ্লেতে দেখা যায়, কনস্টাস মাথা নিচু করে ব্যাট হাতে যাচ্ছিলেন। কোহলিই পাশ থেকে অনেকটা দিক পরিবর্তন করে কনস্টাসের কাছে গিয়ে তাঁকে গিয়ে ধাক্কা মারেন। ধারাভাষ্যকার মাইকেল ভন বলছিলেন, কনস্টাসকে উত্তেজিত করার জন্যই এ কাজ করেছেন কোহলি। তবে এই কাজের জন্য কোহলি কখনোই গর্ব অনুভব করবেন এমন মনে করেন না সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক, 'কোহলি ওই মুহূর্তের কথা মনে করে গর্ব অনুভব করবে না। কনস্টাস স্রেফ হেঁটে যাচ্ছিল। কোহলিকে দেখুন, সে তার পথের দিক পাল্টেছে।'
খুশি হতে পারেননি ভারতীয় গ্রেট সুনীল গাভাস্কারও। তার মতে দুজনেরই শাস্তির সম্ভাবনা আছে, ‘সরে গেলে কেউ ছোট হয়ে যেত না। প্রথমে মনে হয়েছিল যে, দুজনেই নিচে তাকিয়ে ছিল। এখন দেখার বিষয়, কাকে বেশি জরিমানা দিতে হয়।’
তবে সবচেয়ে বেশি চটেছেন রিকি পন্টিং। ধারাভাষ্যকক্ষ থেকে বলেছেন, ‘বেশ কিছু অ্যাঙ্গেল থেকে আমরা ঘটনাটি দেখেছি। আমাকে বলতেই হচ্ছে, ওই পর্যায়ে ভারতের ফিল্ডারদের কোনো অবস্থাতেই ব্যাটসম্যানের ধারেকাছে যাওয়ার কথা নয়। ব্যাটসম্যানরা কোথায় একসঙ্গে দাঁড়ায় সেটা প্রতিটি ফিল্ডারই জানে। আমার কাছে মনে হয়েছে, কনস্টাস অনেক দেরিতে খেয়াল করেছে। কেউ তার সামনে থাকতে পারে সম্ভবত তার ভাবনায় ছিল না। কিন্তু স্ক্রিনে যাকে দেখা যাচ্ছে (কোহলি) বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হতে পারে।’
মেলবোর্নে এদিন ৬০ রান করে আউট হন কনস্টাস। তবে অভিষেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করে মন জয় করেছেন ক্রিকেট ভক্ত-সমালোচকদের। তার উড়ন্ত শুরুর পর ফিফটি পেয়েছেন উসমান খোয়াজা নিজেও। দুজনের ফিফটিতে ভর করে বেশ ভালোই এগুচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
আমার বার্তা/জেএইচ