জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। রোববার (২২ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংলাপে এ ঐকমত্য গঠিত হয়।
বিষয়টি নিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি সাংবাদিকদের বলেন, তিনটি রাজনৈতিক দল ছাড়া বাকি সবাই মত দিয়েছে, একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবেও এমন মেয়াদের কথা ছিল।
তিনি জানান, আলোচনায় এ নিয়েও প্রস্তাব উঠেছে যে প্রতি মেয়াদ এক বছর করা হতে পারে, যাতে করে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করা যায়। এ নিয়ে ভিন্নমত থাকায় আলোচনা এখনও চলমান। পরবর্তী বৈঠকের আগে পারস্পরিক মত বিনিময়ের জন্য দুই দিন সময় নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই আলোচনা কেবল প্রধানমন্ত্রী নিয়েই নয়, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, নারীর প্রতিনিধিত্ব, সাংবিধানিক পদে নিয়োগে সাংবিধানিক কমিশনের ভূমিকা ও সরাসরি নির্বাচনের প্রশ্নসহ বিভিন্ন বিষয়ে হচ্ছে। আমরা ধাপে ধাপে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভিত্তি গড়ে তুলতে চাই।
সংলাপে অংশ নেওয়া ৩৩টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে তিনটি দল ভিন্ন মত পোষণ করেছে। তবে বাকিরা প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসংক্রান্ত প্রস্তাবে ঐকমত্য পোষণ করেছে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা দ্রুত কোনও সিদ্ধান্তে না গিয়ে সমঝোতার পথ খুঁজছি। এসব বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে সবার মতামতের ভিত্তিতে ঐকমত্যের পথেই এগিয়ে যাচ্ছি। এতে করে দেশের গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন আরও সমৃদ্ধ ও টেকসই হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
তিনি আরও বলেন, যদি শেষ পর্যন্ত ঐক্য না হয়, তবে যে দল বা নেতারা দ্বিমত পোষণ করেন, তাদের মতামত জনগণের কাছে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় অধিবেশনের পঞ্চম দিনের সংলাপ শুরু হয়। এতে অংশ নেয় ৩৩টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি পৃথক অধিবেশন করেছে। এই সংলাপে বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে উঠলেও মৌলিক কিছু প্রস্তাবে দ্বিমত ছিল। সে সমস্যা সমাধানে ২ মে থেকে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শুরু হয়, যার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আমার বার্তা/এমই