এজেন্ডা নিয়ে কাজ করলে অন্তর্বর্তী সরকারকে মানুষ মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেছেন, জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের পর প্রত্যেকেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সমর্থন দিয়েছে। তার ওপর আস্থা রেখে তাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছে। কিন্তু জনপ্রত্যাশা ও জনআকাঙ্ক্ষার বাইরে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার অন্য এজেন্ডা নিয়ে কাজ করলে মানুষ মেনে নেবে না।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকালে রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের বিভাগীয় কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, এখনো চাল, ডালের দাম কমেনি। গত দুই দিনে সোনালী মুরগীর দাম কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। আলু আমাদের এখানেই উৎপাদন হয়। আলুর মৌসুমে ৩-৪ টাকা কেজি ছিল। শেখ হাসিনার কারণে গত মৌসুমে ভারত থেকে আলু আমদানি করতে হয়েছে। এবারো যদি আলু আমদানি করতে হয়, কেজি যদি ৭৫-৮০ টাকা হয় তাহলে মানুষ বলবে— ড. ইউনূস সরকারকে সমর্থন দিয়ে আমাদের কী লাভ হলো?
রিজভী বলেন, বাংলাদেশে একজন নিষ্ঠুর দানব সরকার শাসন করেছে। আর কোনো রাষ্ট্র শেখ হাসিনাকে সমর্থন দেয়নি। পার্শ্ববর্তী একটি দেশ (ভারত) সমর্থন দিয়েছে। যে অন্যায়গুলো শেখ হাসিনা করেছে, বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য, কথা বলার অধিকারকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য, গণতন্ত্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার জন্য, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে শিকড় থেকে উপড়ে দেওয়ার যে প্রচেষ্টা শেখ হাসিনা চালিয়েছে, প্রত্যেকটির সঙ্গে ভারত যুক্ত ছিল।
বিএনপির এ নেতা বলেন, গত ১৫ বছর গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। কথা বলার স্বাধীনতা ছিল না, যে কথা বলবে তার জন্য গুম-খুন ও জুলুমের একটি অনুষঙ্গ করে রেখেছিল শেখ হাসিনা। আলেম-ওলামারা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে। সেই আওয়ামী সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আলেম-ওলামাদের ধরার জন্য মসজিদের ভেতরে বুট জুতা পড়ে ঢুকে মসজিদকে অপমানিত করেছে।
নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেছেন, কেউ কেউ বলছেন, আনুপাতিক হারে নির্বাচনের কথা। আনুপাতিক নির্বাচন কিসের জন্য? তৃণমূলের মানুষ বুঝে আনুপাতিক কী? তাহলে এই সরকার যে সংস্কারের কথা বলছে, এটি তো সংস্কার হলো না। একটি রাজনৈতিক দলকে মানুষ ভোট দেবে এবং সেই দল ঠিক করবে, কাকে কাকে কী বানাবে। তাহলে তো কেনা-বেচা আরও শুরু হবে। সেই কারণে দুই একটি রাজনৈতিক দল আনুপাতিক নির্বাচনের কথা বলছে।
জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক কাজী সেলিম রেজার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) অ্যাডভোকেট সৈয়দ শাহীন শওকত খালেক।
আমার বার্তা/এমই