পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফর গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে দুই দেশের সংবাদপত্রেই। দারের সফর পরবর্তী পাক গণমাধ্যমের মূল্যায়নে উঠে এসেছে অনেক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।
দ্য পাকিস্তান অবজারভার সোমবার সম্পাদকীয় নিবন্ধে ইসহাক দারের এই সফরকে ‘দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে সম্পর্কের উষ্ণতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ হিসেবে অভিহিত করেছে।’
আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে চলতি বছরের মে মাসে সংঘটিত ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনে এতে বলা হয়েছে, ‘ইতিমধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতীয় আধিপত্যের মিথকে নাড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান।’
এই অগ্রগতিকে নয়াদিল্লির অধীনতা মুক্ত আঞ্চলিক সহযোগিতা অন্বেষণের নতুন সুযোগ হিসেবেও দেখছে দ্য পাকিস্তান অবজারভার।
সার্ক পুনরুজ্জীবন অথবা নতুন আঞ্চলিক জোটের প্রবর্তনা দিয়ে দৈনিকটি বলছে, ‘যদি ভারত অর্থবহ অগ্রগতিতে বাধা দিতেই থাকে তবে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং অন্যান্য আগ্রহী দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য বিমোচন, জ্বালানি সহযোগিতা এবং নিরাপত্তা উদ্বেগের মতো অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন নামে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করতে দ্বিধা করা উচিত নয়।’
এত বলা হয়েছে, ‘এক দশকেরও বেশি সময় পর এটি ছিল পাকিস্তানের কোনও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর এবং এর প্রতীকী ও বাস্তবিক তাৎপর্য অপরিসীম। শেখ হাসিনা ওয়াজেদ- যার রাজনীতি গভীরভাবে পাকিস্তান-বিরোধী বক্তব্য এবং ভারতের প্রতি যাঁর ছিল স্পষ্ট ঝোঁক; তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে ইসলামাবাদ-ঢাকা সম্পর্কে নতুন আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ গত বছর সমুদ্র বাণিজ্য শুরু করেছিল, যা এই বছরের শুরুতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী সরকার প্রধান ইউনূসের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আলাপচারিতাও ইতিবাচক।’
বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি উভয় দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীরা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে যৌথ কমিশন প্রতিষ্ঠায় সম্মত হয়েছেন, অন্যদিকে শীর্ষ সামরিক কমান্ডাররাও আস্থা তৈরি করতে এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার পথ অনুসন্ধানের জন্য বৈঠক করেছেন। কূটনৈতিক ও সরকারী পাসপোর্টধারীদের ভিসা-মুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদানে সম্মত হয়ে উভয় পক্ষ একটি কূটনৈতিক অগ্রগতিতেও পৌঁছেছে। এসব উন্নয়ন দৃশ্যমান করেছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান বাস্তবতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন অধ্যায় শুরু করতে প্রস্তুত।’
বিভিন্ন ক্ষেত্রে উভয় দেশই একে অপরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে পার উল্লেখ করে এতে আরও বলা হয়েছে, জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারিত হতে পারে।
আমার বার্তা/এমই