বাংলা ভাষাকে “বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা” বলে উল্লেখ করায় ভারতের রাজধানী দিল্লির পুলিশের ওপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
এক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্যকে “অপমানজনক, দেশবিরোধী ও অসাংবিধানিক” বলে আখ্যা দেন। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে সোমবার (৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দিল্লির বঙ্গভবনের অফিসার ইনচার্জকে পাঠানো একটি চিঠিকে ঘিরে এই বিতর্কের সূত্রপাত। ওই চিঠি ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট’–এর আওতায় করা একটি মামলার তদন্তের প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেত্রী মমতা বলেন, “দেখুন কীভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশ বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে! এটি বাঙালিদের চরম অপমান।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলা শুধু আমার মাতৃভাষা নয়, এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্বামী বিবেকানন্দর ভাষা। ভারতীয় জাতীয় সঙ্গীত ‘জন গণ মন’ আর জাতীয় গান ‘বন্দে মাতরম’— দুটিই বাংলা ভাষায় লেখা। কোটি কোটি ভারতীয় এই ভাষায় কথা বলেন ও লেখেন। ভারতীয় সংবিধান যে ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে, তাকে এখন বাংলাদেশি ভাষা বলা হচ্ছে!”
মমতা ব্যানার্জি এ ঘটনাকে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বাঙালি-বিরোধী মানসিকতা’র প্রকাশ হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এটা কেবল অপমানজনক নয়, বরং কেলেঙ্কারিপূর্ণ, দেশবিরোধী এবং অসাংবিধানিক। এই ভাষা ব্যবহার করে দেশের সব বাংলা ভাষাভাষীদের অপমান করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
তৃণমূল কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকেও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (সাবেক টুইটার)–এ দেওয়া এক পোস্টে অভিযোগ করা হয়, দিল্লির একটি মামলায় আটজন সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বঙ্গভবনে চিঠি পাঠিয়ে “বাংলাদেশি জাতীয় ভাষা”র জন্য অনুবাদক চেয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে।
আমার বার্তা/জেএইচ