অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, ১৯ মাস আগে গাজা উপত্যকা এবং ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। এ অবস্থায় পশ্চিমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধারের জন্য ছয়টি সুপারিশের রূপরেখা দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।
সম্প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ পশ্চিমাদের সতর্ক করেন, 'ইউক্রেন এবং গাজা যুদ্ধের উপর পশ্চিমা বিশ্ব বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারে।'
শনিবার (৩১ মে) এক্স-পোস্টে অ্যাগনেস ক্যালামার্ড ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান যে, 'সত্যি বলতে, ১৯ মাস আগেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে গেছে।'
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় পশ্চিমাদের জড়িত থাকা বা নিষ্ক্রিয়তার প্রতিক্রিয়ায় অ্যামনেস্টির মহাসচিব আরও বলেন, 'এটি (বিশ্বাসযোগ্যতা) পুনরুদ্ধার করতে কেবল শব্দের (বাগাড়ম্বর) চেয়ে অনেক বেশি কিছু লাগবে।'
ক্যালামার্ড আরও বলেন, বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধারের জন্য ইসরায়েলের গণহত্যা, মানবিক অবরোধ ও অনাহার এবং বেআইনি দখলদারিত্ব বন্ধে দৃঢ় পদক্ষেপের প্রয়োজন।
তিনি পশ্চিমাদের তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধারের জন্য যে ছয়টি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন, সেগুলো হলো: গণহত্যার অপরাধকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং নামকরণ করা ও ইসরায়েলে সমস্ত অস্ত্র স্থানান্তর বন্ধ করা; ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইসরায়েল চুক্তির অবসান ঘটানো; ইসরায়েলের বেআইনি সামরিক দখলের বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা, যার মধ্যে নিষেধাজ্ঞা এবং বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত।
এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (ICC) জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা; দ্বিজাতিকসহ যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী সকলের তদন্ত ও বিচারের জন্য সার্বজনীন এবং অভ্যন্তরীণ এখতিয়ার ব্যবহার করা; হামাস কর্তৃক বন্দী জিম্মি এবং ইসরায়েল কর্তৃক বেআইনিভাবে আটক সমস্ত ফিলিস্তিনিদের মুক্তি নিশ্চিত করা।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর জাতিসংঘ-সমর্থিত আইসিসি যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার প্রাক্তন যুদ্ধমন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপত্যকায় ইসরায়েলি গণহত্যা যুদ্ধে কমপক্ষে ৫৪,৩৮১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,২৪,০৫৪ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
আমার বার্তা/এমই