গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানের এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে ভারত। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে দেশত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে নয়াদিল্লি।
বুধবার (১৪ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরাসারি গুপ্তচরবৃত্তির কথা উল্লেখ না করলেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই কূটনীতিক তার দাপ্তরিক দায়িত্ব ও পদমর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়— এমন কিছু কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
পাকিস্তানি ওই কর্মকর্তার নাম এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলায় ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে গত শনিবার (১০ মে) যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও সংকট কাটেনি এখন পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার একটি শাখা এই টিআরএফ।
তবে, পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।
দুই দেশের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই গত ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মীরসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সংক্ষিপ্ত সেনা অভিযান পরিচালনা করে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। নয়াদিল্লির তথ্য অনুযায়ী, এ অভিযানে ৭০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তানের দাবি, নিহত হয়েছে ৩১ জন এবং আহত হয়েছে ৫৭ জন।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তিন দিনের মধ্যে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ শুরু করে পাকিস্তান। আরবি ‘বুনিয়ানি উল মারসুস’-এর বাংলা অর্থ সীসার প্রাচীর।
এদিকে পাল্টাপাল্টি এই সংঘাতের মধ্যেই তৎপর হয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কর্মকর্তাদের চাপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ। ১০ মে শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে এই যুদ্ধবিরতি।
কিন্তু, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কাশ্মীরে আবারও হামলার খবর পাওয়া যায়। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আনে দুপক্ষই। সেইসঙ্গে চলছে পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিও।
আমার বার্তা/জেএইচ