যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতিমালায় বেশ কয়েকটি বড় পরিবর্তন এনেছে দেশটির প্রধানমন্তী কেইর স্টারমারের নেতৃত্বাধীন সরকার। সোমবার এ বিষয়ক একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়েছে।
সোমবার ৮২ পৃষ্টার এই শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। তার আগের দিন রোববার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এ ব্যপারে ধারণা দিয়েছিলেন। নতুন যে পরিবর্তনগুলো আনা হচ্ছে, সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হলো—
ক) এখন থেকে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব পেতে হলে দেশটিতে অন্তত ১০ বছর স্থায়ীভাবে বসবাস করতে হবে। আগে এই সময়সীমা ছিল ৫ বছর।
খ) পাশাপাশি, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার মানদণ্ডও আরও কঠোর করা হচ্ছে। যারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবেন এবং আবেদনকারীদের ওপর নির্ভরশীল যেসব প্রাপ্তবয়স্ক যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তাদেরকে অবশ্যই ইংরেজি ভাষায় প্রাথমিক দক্ষতা থাকতে হবে এবং তার প্রমাণ দিতে হবে।
গ) অভিবাসী শ্রমিকদের ব্যাপারে বলা হয়েছে, সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাজ্যের নিয়োগকর্তাদের আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অভিবাসী শ্রমিক রিক্রুটমেন্টের হার কমাতে হবে এবং যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজারের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
ঘ) আন্তর্জাতিক বাজার থেকে যেসব অভিবাসী কর্মী আনা হবে, তাদেরকে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে। শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, দক্ষ কর্মী ক্যাটাগরিতে ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে মানদণ্ড আরও কঠোর করা হবে। ফলে অপেক্ষাকৃত কম দক্ষদের নাগরিকত্ব পেতে ব্যাপক বেগ পেতে হবে।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেন্ট কুপার জানিয়েছেন, চলতি ২০২৫ সালেই কম দক্ষ কর্মী ভিসা ৫০ হাজার কমানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
ঙ) সামাজিক সুরক্ষা ভিসা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্যের সরকার। এর পরিবর্তে বাড়ানো হবে কর্মী ভিসার সংখ্যা।
চ) শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
ছ) পারিবারিক ভিসার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। যারা পারিবারিক ভিসায় যুক্তরাজ্যে যাবেন, তারা নজরদারির মধ্যে থাকবেন এবং আইনবিরোধী কোনো কাজ করলে তাদেরকে পত্রপাঠ ফেরত পাঠাতে পারবে সরকার।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে শুধু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশি নাগরিকদের অপর সরকারের নজর থাকে। সাধারণত যেসব বিদেশি নাগরিক এক বছরের বেশি কারাদণ্ড পান, তাদেরকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
আগের দিন রোববার পার্লামেন্টে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার বলেছিলেন, “অভিবাসন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ, যেমন কাজ, পরিবার ও পড়াশোনার মানদণ্ড আরও কঠোর করা হবে, যেন আমাদের হাতে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ থাকে।”
আমার বার্তা/জেএইচ