খ্যাতিমান মালয়ালম অভিনেতা ও জনপ্রিয় মিমিক্রি শিল্পী কালাভাবন নাভাস আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫১ বছর।
টাইমস অব ইন্ডিয়া শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় কেরালার কোচির চোট্টানিক্কারার একটি হোটেল কক্ষে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই এই অভিনেতার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে শনিবার (২ আগস্ট) তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে বলে জানানো হয়েছে। জানা গেছে, মালয়ালম সিনেমা ‘প্রকামবনম’-এর শুটিং করতে চোট্টানিক্কারার ওই হোটেলেই অবস্থান করছিলেন নাভাস।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় চেক আউট করে বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে রিসেপশনে না যাওয়ায় হোটেল কর্মচারী ও শুটিং ইউনিটের সদস্যরা তার রুমে যান। দরজা ভেঙে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে তখন আর কিছুই করার ছিল না। পুলিশ জানিয়েছে, হোটেলের ঘরে কোনো ধরনের সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। অভিনেতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
কালাভাবন নাভাস ছিলেন দক্ষিণ ভারতের বিনোদন জগতের এক উজ্জ্বল নাম। মঞ্চনাটক, সিনেমা ও টেলিভিশনে সমান দক্ষতায় কাজ করে তিনি নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন একজন প্রতিভাবান শিল্পী হিসেবে। তার অভিনয়জীবনের শুরু ১৯৯৫ সালে ‘চৈথন্যম’ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর একে একে ‘জুনিয়র ম্যানড্রেক’, ‘মীনাক্ষী কল্যাণম’, ‘ভেট্টম’, ‘চট্টম্বিনাদু’, ‘এবিসিডি’, ‘মেরা নাম শাজি’, ‘ডিটেকটিভ উজ্জ্বলান’-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন।
তবে শুধু সিনেমা নয়, মিমিক্রির মাধ্যমে মঞ্চে তার উপস্থিতিও দর্শকদের মনে রেখাপাত করে। 'কালাভাবন' মিমিক্রি দলের হয়ে তিনি দীর্ঘদিন মঞ্চ মাতিয়েছেন। এই দলে তার ভাই নিয়াস বাকারও ছিলেন, যিনি নিজেও একজন সফল মিমিক্রি শিল্পী ও অভিনেতা। পারিবারিক জীবনেও শিল্প-সংস্কৃতির আবহে বেড়ে উঠেছিলেন নাভাস। তার বাবা আবুবকর একজন খ্যাতনামা মঞ্চ অভিনেতা ছিলেন। স্ত্রী রেহনা নাভাসও একজন অভিনেত্রী। ২০০২ সালে তাদের বিয়ে হয়।
একাধারে কমেডিয়ান, মিমিক্রি শিল্পী ও অভিনেতা হিসেবে দর্শকপ্রিয় এই মানুষটির আকস্মিক মৃত্যুতে শোকাহত কেরালার শিল্পাঙ্গন। বহু ভক্ত ও সহকর্মী সামাজিক মাধ্যমে তাকে স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। তার মৃত্যু শুধু মালয়ালম চলচ্চিত্রের জন্য নয়, বরং সমগ্র দক্ষিণ ভারতীয় বিনোদন জগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
আমার বার্তা/এল/এমই