বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) দলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও শুল্ক বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার গুলশানে মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত এ বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে সহ-সভাপতি রেজওয়ান সেলিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, পরিচালক আবদুস সালাম এবং এফটিএ অ্যান্ড পিটিএ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুব উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে, ইউএসটিআর-এর সহকারী প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এছাড়া ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন ও লেবার অ্যাটাশে লীনা খান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মূলত বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পোশাকের ওপর পাল্টা শুল্ক কমানো, শ্রম আইন সংস্কার এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। বিজিএমইএ সভাপতি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে গড় এমএফএন শুল্ক ১৬.৫% এবং অতিরিক্ত ২০% পাল্টা শুল্ক যোগ হয়ে প্রায় ৩৬.৫% শুল্ক আরোপিত হচ্ছে, যা রপ্তানির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক কমানোর অনুরোধ জানান এবং স্ট্যাকিং মেথড প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের একটি নির্বাহী আদেশের প্রসঙ্গ উঠে আসে, যেখানে বলা হয়—বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত পোশাকে যদি ২০% বা তার বেশি মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, তবে ২০% অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আনুপাতিক ছাড় মিলবে। মার্কিন প্রতিনিধিদল জানায়, বিষয়টি নিয়ে ইউএস কাস্টমস কাজ করছে এবং নির্ধারিত সময়ে প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী নিয়েও আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আইন সংস্কারের আহ্বান জানান। জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, তার বোর্ড দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শ্রম আইন সংস্কারে উদ্যোগ নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে ৮১টি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ করেছে।
বিজিএমইএ সভাপতি অনুরোধ জানান, দেশের বাস্তবতা ও শিল্পের অগ্রগতি বিবেচনায় শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়গুলো ইতিবাচকভাবে দেখার জন্য।
বৈঠক শেষে মার্কিন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রশংসা করে এবং দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো ও পাল্টা শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে।
আমার বার্তা/এমই