‘যুবদলের মদ খাওয়ার কথা লিখছেন? তোর হাড্ডি ভেঙ্গে দেব। ২০১৩ সালের কথা মনে নাই? তোর কোন বাপ আছে দেখিয়ে দেব। আওয়ামী লীগের সময় পাড় পেয়ে গেছোস। তোর কিছুই হয় নাই। এখন কথা কম। কুকুরের বাচ্চা। তুই গোবিন্ধল গ্রাম সম্বন্ধে কিছুই জানস না। তোর কি অবস্থা করি দেখবি।’ এক সাংবাদিককে উত্তেজিত কন্ঠে এসব অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেন মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর নুরে আলম বাবুল। ভোক্তভোগী ওই সাংবাদিক দৈনিক ইত্তেফাকের সিঙ্গাইর উপজেলা প্রতিনিধি ও জেলা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মানবেন্দ্র চক্রবর্তী।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেছেন ওই সাংবাদিক।
জানাগেছে, গত ৭ এপ্রিল "সিঙ্গাইরে আসামি ছাড়িয়ে নিতে থানায় ঢুকে পুলিশকে হুমকি’ দুই যুবদল নেতা গ্রেফতার" শিরোনামে দৈনিক ইত্তেফাকে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
আটককৃতরা হলেন- পৌর যুবদলের সদস্য সচিব গোবিন্দল এলাকার মো. শফিকুল ইসলাম জীবন ও একই এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের যুবদলের সদস্য শফিকুল ইসলাম। তারা মদ্যপান থাকার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ওয়াশ করানো হয়।
নিউজের একাংশে উল্লেখ থাকে, থানার দালাল হিসেবে পরিচিত এলাকার সাবেক এক জন প্রতিনিধিও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে আসামি ছেড়ে দেওয়ার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। তিনি বিগত সরকারের আমলেও থানার দালালি করতেন। কারো নাম সংবাদে উল্লেখ না থাকলেও নিজেকে অভিযুক্ত ভেবে বিএনপি এই নেতা ওই সাংবাদিককে হুমকি দেন।
হুমকির নিন্দা জানিয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক আফরোজা খান রিতা বলেন, থানায় মাতলামি করার কারণে ওদের দল থেকে বহিষ্কার করেছি বলেই নিউজ হয়েছে। বাবুল কেন সাংবাদিককে হুমকি দেবে? দলের হলেও আমি তাকে পছন্দ করি না। ওর নামে জিডি করুন। ওকে বহিষ্কার করা হবে।
বিএনপির অপর নেতা সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মঈনুল ইসলাম খান শান্ত বলেন, রাজনৈতিকভাবে বিএনপি একটা বড় দল। কিন্তু আমরা এখনো আর ক্ষমতায় আসিনি। আমি এমপি না বলে পুরোপুরি এগুলো বন্ধ করার মত সুযোগ নেই। দলের খারাপ যারা তাদের আমি পছন্দ করি না। আমি তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবো।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা নূরে আলম বাবুল বলেন, সাংবাদিককে কোন হুমকি দেওয়া হয়নি। শুধু আমি জিজ্ঞেস করেছি যুবদল নেতাদের নিয়ে এসব লেখা কি ঠিক হয়েছে।
সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌফিক আজম বলেন, সাংবাদিককে হুমকির বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি)পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত বাবুলের বিরুদ্ধে গত ৫ এপ্রিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেটিও তদন্ত চলছে।