যশোরের চৌগাছায় মিথ্যা মামলায় এক গ্রামের অর্ধশত কৃষকদের রাতের আধারে গ্রেফতার ও হয়রানি করার প্রতিবাদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ভুক্তভোগী কৃষকদের পরিবার ও পলাতক আসামিরা। শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে প্রেসক্লাব চৌগাছা'র সামনে যশোর সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে উপজেলার মাকাপুর গ্রামের প্রায় অর্ধশত কৃষক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
মাকাপুর গ্রামের বাসিন্দা স্নেহলতা পারভীন অভিযোগ করে জানান, তার ভাই লন্ডন প্রবাসী এ কে এম মর্তুজা রাসেল গত ২৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে গ্রামের বাড়ীতে আসে, তার বাবা হায়দার আলীসহ ও অন্যান্য ভাই-বোনদের সমস্ত সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য বৃদ্ধ বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার কথা বলে তার অধীনে নিয়ে হায়দার আলীর নামে থাকা সকল সম্পত্তি নিজের নামে করার জন্য গভীর ভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করে। কিন্তু হায়দার আলীর নামে থাকা সকল সম্পত্তি এ কে এম মর্তুজা রাসেল তার নিজ নামে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় একের পর এক ষড়যন্ত্র ও পাশবিক নির্যাতন চালাতে থাকে তার মা' ও অনান্য ভাই-বোনদের ওপর। বিগত বছর থেকে চৌগাছার কুখ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা এস এম হাবিবুর রহমান সহ তার গাড়ী চালক সোহেল রানা মিলে আমাদের গ্রামের বাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলা করে এবং এছাড়া আরো অন্যান্য স্থানীয় ভূমি দস্যুরা যারা এখনো লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার কে এম মর্তুজা রাসেলের পক্ষ নিয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অন্যায়ভাবে তাদের মোট ২১ দশমিক ২২ একর ১৪৩৪ দশমিক ৮৪ শতক জমি জোরপূর্বক দখল ও আত্মসাৎ করে রেখেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা হায়দার আলীর জমিতে ভুট্রাসহ নানা ফসল চাষাবাদ করেছে অনেক কৃষক। এসকল ফসল ওই গ্রামের কৃষকেরা কর্তক করলে তাদের বাড়িতে হামলা করছে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা। এছাড়া আমার ভাই লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার কে এম মর্তুজা রাসেল প্রবাসে বসে তিনিসহ তার বাহিনী দিয়ে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে এ সকল কৃষকদের হয়রানি করছে। তাদের দিনে রাতে বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। অনাহারে দিন কাটাচ্ছে এ সকল কৃষকদের পরিবার। এই কাজে চৌগাছা থানা পুলিশ সুযোগ বুঝে ব্যাপক মামলা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। মানববন্ধনে গ্রামবাসী অভিযোগ করেন মাকাপুর গ্রামের হামজা আলী (৫৫), শহিদুল ইসলাম (৫৩), সামসার (৫৬),ফিরোজ হোসেন (৫০), বাবর আলী (২৮), নারায়নপুর গ্রামের হামিদা খাতুন (৭০), মাসুম (৩৫) মজনুর রহমান (৫৫), রাজিব হোসেন (২৫), সাহদিা খাতুন (৬৫), হাসিবুল হাসান (৪৫), মিজানুর রহমান (৫৮), সোহেল রানা (২৫) সহ অজ্ঞাত আরও ১৫/২০ জন ভূমিদস্যু তাদের ওপর এ অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে।
গ্রেফতার হওয়া ভুক্তভোগী মাকাপুর গ্রামের কৃষক আসানুর রহমানের স্ত্রী নাসিমা বেগম বলেন, 'আমার স্বামী গতকাল হায়দার আলীর জমিতে দিন চুক্তিতে গম কাটছিল। রাতে বাড়িতে পুলিশ এসে গম কাটার অভিযোগে ধরে নিয়ে থানায় নিয়ে যায়। আরেক আসামি নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, আমাদের ওই গ্রামের কোন কৃষককে বাড়িতে থাকতে দিচ্ছে না থানা পুলিশ এবং ভূমিদস্যুরা। আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। যখন তখন যাকে তাকে ভুয়া মিথ্যা মামলায় ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আমাদের অভিযোগ এ ভূমিদস্যুদের সাথে এ মামলা বানিজ্যে থানা পুলিশের কোন আতাত রয়েছে।