কবি ও সাংবাদিক মো. বেল্লাল হাওলাদার-এর স্মৃতিকথার আলোকে রচিত গল্পগ্রন্থ ‘স্মৃতিরা অমলিন’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) বিকালে মতিঝিলে সফেন ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ে সফেন ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে কবিকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও সম্মাননা প্রদান করেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার-এর সম্পাদক ও প্রকাশক ড. খান আসাদুজ্জামান পিভিএমএস। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নতুনধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দ্যা ডেইলি বাংলাদেশ ডায়েরি’র সম্পাদক ড. মো. সাদী-উজ-জামান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সমাচার-এর বার্তা সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা কবি ও কথাশিল্পী মজিবুর রহমান মজনু, নতুনধরা এসেটস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক,বিজনেস ডেভেলপমেন্ট, মোহাম্মদ শাহীন মিঞা শিকদার, কান্ট্রি ডিরেক্টর মাহাবুবুর রহমান, বিশিষ্ট নারীনেত্রী ও সমাজসেবিকা রেহানা পারভীন রুপা, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার-এর চিফ রিপোর্টার মো. জাহিদুর রহমান, দৈনিক সকালের সময় ও দ্যা বেস্ট নিউজের নির্বাহী সম্পাদক কমল চৌধুরী। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন, সফেন ফ্যামিলির হেড অব মার্কেটিং মো. আমিনুল ইসলাম। সঞ্চালনায় ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী ও দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার-এর সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার আশরাফুজ্জামান সাইলু শাহ্।
প্রধান অতিথি ড. খান আসাদুজ্জামান তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমাদের জীবনের অনিবার্য সত্য প্রত্যেককে ক্রমান্বয়ে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছি, লেখক বইয়ের প্রচ্ছদে এরকমই একটি ইঙ্গিত করেছেন, ‘বিভিন্ন রংবেরঙের পাতারা ঝরে পড়ে প্রতিনিয়ত, এই দৃশ্য দেখলে বুকের মাঝে ধরফর করে, কান্না পায়, মনে হয় এগিয়ে চলেছি মায়ের হারিয়ে যাওয়া পথে।’এই দুটি লাইনের মাধ্যমে। এতে লেখক বুঝাতে চেয়েছেন, আমরা প্রত্যেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছি। আসলে শিল্প সংস্কৃতির চর্চার মূল উদ্দেশ্য হল সত্য-সুন্দরকে লালনের মাধ্যমে মানুষের জীবনের বৃহত্তর কল্যাণ সাধন করা। সে কাজটি অত্যন্ত দায়িত্বের সাথে লেখক বেল্লাল হাওলাদার করছেন। ওনার বইয়ের নামকরণ ভীষণ চমৎকার। আমাদের জীবনের বহুবিচিত্র রকমের স্মৃতি যেটি ঘুরে ফিরে আসে মূলত সেগুলোকে এই বইয়ে তুলে ধরেছেন লেখক। বিশেষ করে এই বইটি তার মায়ের নামে উৎসর্গ করেছেন। এই মাতৃভক্তি প্রতিটি মানুষের বা প্রতিটি সন্তানের মায়ের প্রতি যে ভালোবাসা শ্রদ্ধা এটিও আমাদের চেতনার দাঁড়কে অন্যভাবে নাড়া দিয়েছে। স্মৃতিরা অমলিন এই গল্পটিতে তিনি তার মায়ের সাথে চলার সুখ-দুঃখের, হাসি আর আনন্দের নানা রকম স্মৃতি আলোকপাত করেছেন। অত্যন্ত সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় নান্দনিকতার সাথে। তিনি বাংলাদেশ সমাচারে চাকরির পাশাপাশি সুন্দরকে লালন করে সাহিত্য সংস্কৃতির সত্যকে লালন করেন। আমি মনে করি বেল্লাল ভবিষ্যতে আরো সুন্দর সুন্দর লেখনী দিয়ে, কবিতা দিয়ে বাংলার এই সাহিত্য ভান্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করবে এই প্রত্যাশা রাখছি। সেই সাথে তার সুস্বাস্থ্য সুন্দর জীবন কামনা করছি’।
প্রধান আলোচক ড. সাদী-উজ-জামান বলেন, ‘স্মৃতিরা অমলিন’ গ্রন্থটি পড়লে অবশ্যই পাঠক তার জীবন ঘনিষ্ঠ এবং চলার পথের নানান স্মৃতি মানসপটে ভেসে উঠবে। বিশেষ করে বইটির প্রচ্ছদ ও নামকরণ আমাকে শৈশবের নানান স্মৃতিকথা মনে করিয়ে দিয়েছে। এটি একটি আকর্ষণীয় বই। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে শৈশব-কৈশোরের মূলকে বা শিকড়কে যেন জীবন থেকে না হারিয়ে ফেলি। লেখকের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।’
নতুন গল্পগ্রন্থ নিয়ে লেখক বেল্লাল হাওলাদার তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি চেষ্টা করেছি নিজের স্মৃতিগুলোকে শিমুলতুলোর মতো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। বিশেষ করে আমার মায়ের স্মৃতিচারণে লেখা গল্প পড়লে পাঠককে কাঁদাবে। আশা করি পাঠক এই গল্পের বইটি পড়ে অনুভব করতে পারবেন তাদের মায়ের সাথে কাটানো নানান স্মৃতিচারণ।’
লেখক তাঁর এই গল্পগ্রন্থটিতে বাস্তবতার নিরিখে সাতটি জীবনঘনিষ্ঠ ও হৃদয়গ্রাহী কাহিনী বিন্যাসে চিত্রায়ণ করেছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা ও মধুর সময়ের গল্প-ঘটনা মিলেই তো জীবন। কিন্তু কোনো গল্প-ঘটনা মানুষ অনুভব করতে পারেন; কোনোটা পারে না। অথচ হতে পারে গল্পটি একজন মানুষকে শেখার বা শেখানোর।
এর আগে ২০২০ সালে কবি বেল্লাল হাওলাদারের একক কবিতাগ্রন্থ ‘আবেগ ভরা হৃদয়’ প্রকাশিত হয়। এছাড়া তিনি বেশ কয়েকটি যৌথ কবিতা সংকলনের সম্পাদনা করেছেন। যা পাঠকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এরমধ্যে ‘তবুও আশায় বাঁচি’, ‘অপূর্ণ ইচ্ছে’, ‘মা আমার চন্দ্রতারা’, ‘আলোর মশাল’ উল্লেখযোগ্য।
আমার বার্তা/এমই