ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভিড় কমাতে যানবাহন ও বহিরাগতদের চলাচল সীমিত করার উদ্যোগ প্রত্যাহার করতে হবে। সংগঠনটির বক্তব্য, ক্যাম্পাসে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার সীমিত করার সিদ্ধান্ত জনদুর্ভোগের কারণ। এতে জনমনে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। যানবাহন ও মানব চলাচলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছেন তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্যরা সাক্ষাৎ করেন। আজ শুক্রবার সাক্ষাতের আলোচনার বিষয়ে সংগঠনটির ফেসবুক পেজে এক বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়।
সাক্ষাতে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়েমা হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, অধ্যাপক মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক কামাল আহমেদ চৌধুরী, তাসনীম সিরাজ মাহবুব, রুশাদ ফরিদী, মোশাহিদা সুলতানা, কাজলী সেহরীন ইসলাম, দীপ্তি দত্ত, মারজিয়া রহমান ও সামিনা লুৎফা উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাতে শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্যরা ক্যাম্পাস উন্মুক্ত চলাচল, ডাকসু ও শিক্ষক সমিতি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এবং সিন্ডিকেট, সিনেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বিষয়গুলোসহ অন্যান্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিভিন্ন দিবস ও উৎসব ঘিরে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ভিড় বেশি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভিড়ভাট্টা কমাতে বিজয় দিবসের আগ দিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে যানবাহন ও বহিরাগতদের চলাচল সীমিত করতে সাতটি প্রবেশপথে ব্যারিকেড বসায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে ক্যাম্পাসে গাড়ি প্রবেশ সীমিত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। শুক্রবার, শনিবার ও সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা এবং অফিস চলাকালীন দিনগুলোতে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি, জরুরি সেবা ব্যতীত অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ ঠেকানোর নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কও বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, আমাদের মনে রাখা দরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের এক ঐতিহাসিক জনপরিসর। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনা থাকার কারণে জাতীয় অনেক উদযাপনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানসহ প্রায় সব জাতীয় ও রাজনৈতিক আন্দোলন এখানেই শুরু হয়েছে। এ ছাড়া নানান সভা-সেমিনার, বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার প্রাণকেন্দ্রও এই বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাকৃতিক পরিবেশ হিসেবেও এই এলাকাটুকু পুরো শহরের নিঃশ্বাস ফেলার জায়গা। আশপাশে গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিপণিকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ অফিস কাছাকাছি হওয়ায় সিটি করপোরেশনের যে রাস্তাগুলো ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে চলে গেছে, সেগুলোতে যান চলাচল ক্যাম্পাসের বাইরের নাগরিকদের অধিকার।
উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতে মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ‘ঘৃণার প্রতীক’ মুছে ফেলার বিষয়টি নিয়েও নিন্দা জানিয়েছে শিক্ষক নেটওয়ার্ক।