নিয়মের তোয়াক্কা না করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ার্ড মাষ্টার বানানোর হিড়িক পড়েছে।ছয়টি পদের বিপরীতে ৮ জন থাকলেও নতুন করে দেড় মাসের ব্যবধানে আরো দুইজন করে চারজন ওয়ার্ড মাষ্টার বানানো হয়েছে।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাষ্টার রিয়াজ উদ্দিন ও মেডিসিন বিভাগের ওয়ার্ড মাষ্টার জিল্লুর রহমানকে বিভিন্ন অপরাধে হাতেনাতে আটক করে শিক্ষার্থীরা। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে এর বিপরীতে চলতি বছরের আগস্ট মাসের ১৭ তারিখে আব্দুল আজিজ ও আইউব আলীকে ওয়ার্ড মাষ্টার(অতিরিক্ত দায়িত্ব) পদে সাময়িকভাবে দায়িত্ব দিয়ে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। এর ঠিক দেড় মাসের মাথায় অর্থাৎ চলতি মাসের ১ অক্টোবর কোন কারণ ছাড়াই আব্দুল আজিজকে ওয়ার্ড মাষ্টার থেকে তার আগের পদে ফিরিয়ে দিয়ে নতুন করে অফিস সহায়ক মো. আজিম ও মো আব্দুল আউয়াল লিটনকে ওয়ার্ড মাষ্টার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) করে নতুন আরেকটি চিঠি করে হাসপাতালের পরিচালক। তবে একই সাথে ওয়ার্ড মাষ্টারের(অতিরিক্ত দায়িত্ব) দায়িত্ব পাওয়া আইয়ুব আলী তার পদেই রয়েছেন।আগস্টে অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়া দুইজন ওয়ার্ড মাস্টারকে দিলেও এদের মধ্যে একজনকে আগের জায়গায় (সর্দার) পদে ফিরিয়ে দেওয়ায় যে বৈষম্য তৈরি হয়েছে হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে সেই আলোচনা সমালোচনা চলছে।
মুঠোফোনে অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়া ওয়ার্ড মাষ্টার থেকে সরিয়ে দেওয়া আব্দুল আজিজ জানান,চলতি বছরের ১৭ আগস্ট আমাকে ওয়ার্ড মাষ্টার হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে নতুন বিল্ডিং এ বদলি করা হয়। হঠাৎ জানতে পারি আমাকে আগের জায়গায়(সর্দার পদে) একটি চিঠি করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার কি অপরাধ সেটা আমি জানিনা। আমার কোন অভিযোগ নেই।আমি নির্ভেজাল মানুষ।আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রেখেছি। অভিযোগ করে কোন লাভ নেই।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই হাসপাতালে ছয়টি ওয়ার্ড মাষ্টার অর্থাৎ তৃতীয় শ্রেণীর পোস্ট রয়েছে। এখানে সরাসরি ২ জন ওয়ার্ড মাষ্টার ও দুইজন চলতি দায়িত্বে আছেন।বাকিদের অতিরিক্ত দায়িত্বে ওয়ার্ড মাষ্টার বানানো হয়েছে।সেখানে চলতি বছরের ১৭ আগষ্ট পর্যন্ত ৮ জন ওয়ার্ড মাস্টার ছিল।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর নানা অপরাধের কারনে ওয়ার্ড মাষ্টার জিল্লুর ও ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজকে আটক করে শিক্ষার্থীরা।পরে মৌখিকভাবে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।এর কয়েকদিন পরেই অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে দুইজন ওয়ার্ড মাস্টার দেওয়া হয়। হাসপাতালে একজন বিশেষ সহকারি পরিচালকের আশীর্বাদ পুষ্ট হওয়ায় নতুন দুইজন ওয়ার্ড মাষ্টার দায়িত্ব দেওয়ার পর আবার ওয়ার্ড মাষ্টার রিয়াজ ও জিল্লুর রহমানকে কাজে যোগদান এবং হাসপাতালের নতুন ভবন ও বহির্বিভাগে দুইজনকে বদলি করা হয়। এরপর চলতি মাসের ১ অক্টোবর আরো দুইজন ওয়ার্ড মাস্টার করে নতুন একটি চিঠি এবং অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা আব্দুল আজিজকে কোন কারণ ছাড়াই তার আগের সর্দার পদে দায়িত্ব পালন করার আদেশ দেওয়া হয়। এইখানে একসাথে আইয়ুব আলী ও আব্দুল আজিজকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে ওয়ার্ড মাষ্টার করা হয়েছিল কিন্তু আইয়ুব আলী কি এমন ভালো কাজ করেছে যে তিনি জরুরী বিভাগের ওয়ার্ড মাষ্টার রয়ে গেলেন এবং আব্দুল আজিজ কি খারাপ কাজ করেছেন যে তাকে আবার সর্দার পদে পাঠানো হলো এই নিয়ে হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও আলোচনা সমালোচনা চলছে। ওয়ার্ড মাস্টার একটি তৃতীয় শ্রেণীর পদ এইচ এস সি পাশে সরাসরি এই পদে নিয়োগ দেয়া হয়।কিন্তু যাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে অনেকেরই শিক্ষকতা যোগ্যতা যাচাই-বাছাই না করেই তাদেরকেও এই পদে দেয়া হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। চিঠি দিয়ে যদি একজনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব ওয়ার্ড মাস্টার করা হয় তাহলে কেন আবার তাকে নামানো হলো।ঢাকা মেডিকেলের ইতিহাসে এমন কোন ঘটনা এর আগে ঘটেনি।হাসপাতালের পরিচালক তিনি সেই ইতিহাস তৈরি করলেন।
কর্মকর্তা কর্মচারীরা আরও জানান,একবার কাউকে সম্মানের জায়গায় বসালে সেখান থেকে আর নামানো যায় না। ছয়টি পদের বিপরীতে কিভাবে হাসপাতালে ১২ জন ওয়ার্ড মাস্টার কাজ করবে এটি আমাদের বোধগম্য হয় না।কাজের স্বার্থে পরিচালক স্থানীয় আদেশে ওয়ার্ড মাস্টার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অনেকেই দিতে পারেন কিন্তু চাইলেই আবার নামাতে পারেন না।যদি তাকে নামাতেই হয় তাহলে কেন তিনি না বুঝে তাকে ওয়ার্ড মাষ্টারের দায়িত্ব দিলেন। তিনি কি কারো প্রেসক্রিপশনে এই কাজগুলা করছেন নাকি নিজে থেকেই এই কাজ করছেন। এমনও হইতে পারে আব্দুল আজিজ টাকা ছাড়াই ওয়ার্ড মাস্টার হয়েছিলেন পরে স্থায়ী হওয়ার জন্য টাকা পয়সা লেনদেন না হওয়ায় তাকে আবার সর্দার পদে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে এমন শঙ্কা আমরা করতেই পারি। আব্দুল আজিজ চাইলে এই বিষয়ে আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান।এখানে অবশ্যই আর্থিক লেনদেনের ঘটনা থাকতে পারে।আগের পরিচালক অর্থাৎ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হকের সাড়ে তিন বছর দায়িত্ব পালন করা কালে বাবুল নামে একজন ওয়ার্ড মাস্টার রিটারমেন্টে যাওয়ার বিপরীতে একজন ওয়ার্ড মাষ্টার দেওয়া হয়েছিল। তিনি কি হাসপাতাল চালাননি।তিনিও এই কয়জনকে দিয়েই হাসপাতাল পরিচালনা করেছেন। আর বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান দায়িত্ব পালনের ৯ মাসে চারজন ওয়ার্ড মাস্টারের চিঠি করেছেন। এই ১১ জনের মধ্যে নতুন ভবনে দুইজন কেবিন ব্লকে দুইজন,বহির্বিভাগে দুইজনকে দায়িত্ব দেওয়ায় কাজের ধীরগতি আসবে বলে মনে করেন তারা। প্রত্যেক ওয়ার্ড মাষ্টার বসার জন্য আলাদা রুম প্রয়োজন এখন একটি রুমের ভিতর দুজন করে ওয়ার্ড মাস্টার ডিউটি করতে হবে।কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেকে মনে করেন সম্প্রতি হাসপাতালের পরিচালক একজন সহকারী পরিচালক ও একজন চিকিৎসক ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) এর একটি প্রোগ্রামে সুইজারল্যান্ড ঘুরে এসেছেন। সেখানে পরিচালক এবং সহকারী পরিচালক ডাঃ আশরাফুল আলম মিটিং করে এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছেন কি? নিয়ম অনুযায়ী একজন সহকারী পরিচালক তিন বছরের বেশি থাকার কথা নয়। অথচ তার চার বছর পার হলেও হাসপাতালে কি এমন মধু আছে তিনি এখানেই সহকারী পরিচালক পদে আছেন। এর আগের পরিচালককেও এ রকম দেশের বাইরে ট্যুরে নিয়ে গিয়ে তাকে বশ করার অনেক গুঞ্জন রয়েছে।অনেকে এই সহকারী পরিচালককে মনে করেন হাসপাতালের অঘোষিত পরিচালক। যদিও ডাঃ আশরাফুল আলম অর্থ স্টোরের দায়িত্বে আছেন। হাসপাতালে দুইজন উপ-পরিচালক ও ৩ জন সহকারী পরিচালক থাকলেও কার কোথায় ইন্টার্নাল বদলি হবে, কাকে কোথায় বদলি করতে হবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের কোন মতামত নেয়া হয় না।নামে মাত্রই তারা চেয়ারে বসে আছেন। কিন্তু একজন অর্থ দায়িত্বে থাকা সহকারী পরিচালকের কথাই শেষ কথা।
হাসপাতালে এত ওয়ার্ড মাষ্টার দেওয়া হচ্ছে আপনি বিষয়টি জানেন কিনা জানতে চাইলে হাসপাতালের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ডা মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম বলেন, আগস্টে দুইজন ওয়ার্ড ওয়ার্ড মাষ্টারের ব্যাপারে সহকারী পরিচালক(প্রশাসন) আব্দুর রহমান আমাকে বলেছিল সে বিষয়টি আমি জানতাম।
১ অক্টোবর আরো দুইজন ওয়ার্ড মাস্টার দেয়া হয়েছে এ বিষয়টি আপনি জানেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,আমি হাসপাতালের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) হাসপাতালের পরিচালক না থাকলে ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করি।সর্বশেষ নতুন যে দুজন ওয়ার্ড মাষ্টার করা হয়েছে আপনি যেটা বললেন এমন কোন চিঠি আমি দেখি নাই যদি এটি এক তারিখে অর্ডার হয়ে থাকে আজকে তিন তারিখ আমার কাছে সেই চিঠির কোন কপি এখনো আসেনি। আমি ডিডি এডমিন আমি জানিনা ডিডি এডমিন কে না জানাইয়া বা তার নলেজ ছাড়া এটা কিভাবে হয়। যদি ১ তারিখে অর্ডার হয় আজকে তিন তারিখ আমি এখনো চিঠি পাইনি।
ওয়ার্ড মাষ্টার কিভাবে দেওয়া হয় এখানে কি কোন কমিটি হয় কিনা,কারো কোন কর্মদক্ষতা শিক্ষাগত যোগ্যতা বা বয়সের কোন ব্যাপার আছে কিনা অথবা পরিচালক একক সিদ্ধান্ত দিতে পারেন কি না ,এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,অথরিটি মনে করলে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে কাজ আদায় নিতে পারেন।পরিচালক তার একক সিদ্ধান্তই করছে।আমরা যারা প্রশাসনে আছি কমিটি থাকতে হবে এমন না পরিচালক ইচ্ছা করলে দিতে পারে। কিন্তু যারা প্রশাসনে আছে তাদের সবার সাথে আলাপ-আলোচনা করেই দেওয়া উচিত। এর পিছনে তো কারণও আছে ,আমি শুনছি বা জানতে পেরেছি বিভিন্ন সময়ে টাকা পয়সার ঘ্রাণ আছে। অতীতেও পাওয়া গেছে এখনোও সেরকম কিছু আছে কিনা এখন যদি কেউ সবাইকে অন্ধকারে রেখে করে তাহলে তো সন্দেহ জাগবে।
কর্তৃপক্ষ যদি কাউকে পদ উন্নতি করে সেক্ষেত্রে আবার কত অবনতি করা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু এটি চিঠিতে লেখা আছে সাময়িকভাবে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো এক্ষেত্রে এটি করা যায়।কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য সাময়িকভাবে তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলে সেটা আবার কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে নিতে পারে।আর যদি কাউকে পদোন্নতির ক্ষেত্রে করা হয় তাহলে সেটি করা যায় না।কিন্তু এখানে আমার একটি প্রশ্ন আছে এখানে তো দুজনের অর্ডার হয়েছিল।তাহলে একজন প্রিয় পাত্র হয়ে গেল। তাকে রাখলাম আর আরেকজন কি দোষ করছে তাকে আবার আগের অবস্থায় ফেরত পাঠালাম।সারা দেশে যেখানে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলল সেখানে বৈষম্য হয়ে গেল না।একজনকে বাদ দিয়ে আবার আরো ওয়ার্ড মাষ্টার সাময়িকভাবে কেন দেয়া হচ্ছে, সেটিও বোধগম্য নয়।দুই রকম সিদ্ধান্ত কেন এর পিছনে কি কোন কারণ আছে এগুলো আপনারা সাংবাদিক হিসেবে বের করেন।
উপ-পরিচালক আরো বলেন,সব জায়গায় তো আমরা টাকা পয়সা লেনদেনের কথা শুনতে পাই আমাদের কানে আসে কিন্তু হাতেনাতে ধরতে পারি না প্রমাণ পাইনা।একই জায়গায় যে ভিন্ন ভিন্ন কাজ হচ্ছে।এক হচ্ছে ওয়ার্ড মাস্টার আছে সেখানে অতিরিক্ত কেন দেয়া দরকার বা দিতেই যদি হয় একজনকে দিয়ে তাকে আবার পদাবনতি করে অসম্মানিত করা এর পেছনে উদ্দেশ্য কি আছে।এটা কি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ নাকি এর পিছনে অন্য কোন স্বার্থ আছে।আমি একজন ডিডি এডমিন আমাকে অন্ধকারে রেখে, আমি জানিই না এমন অনেক প্রশ্ন সামনেই আছে আপনারা সাংবাদিক হিসেবে এর প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পারেন কি না।আপনারা ডিরেক্টরকে সরাসরি প্রশ্ন করতে পারেন সাংবাদিক হিসেবে।আপনি যে আজিজের কথা বলেন সে কিন্তু আমার আত্মীয় না । আমার আর একটা ন্যাচার আছে, আমি সবসময় দুর্বলের পক্ষে থাকি।আমিও প্রশ্ন করতে পারি যে আজিজ কি দোষ করছে আর আইউব কি এমন পূণ্যের কাজ করছে যে একই সাথে অর্ডার করে একজনকে রাখলাম আরেকজনকে রাখলাম না।আবার একই সময়ে নতুন অন্য দুজনকে নিয়ে আসলাম। এটা কি ট্রায়াল চলতেছে, ট্রায়ালের জায়গা।ওয়ার্ড মাস্টার হিসেবে যেমন স্পোর্টসের আগে হিট লিষ্ট তৈরি করা হয় এখানে কি সেরকম জায়গা।নাকি এখানে অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে এখানে।
সম্প্রতি সুইজারল্যান্ড ঘুরে এসেছেন সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম।
সম্প্রতি সুইজারল্যান্ড ঘুরে এসেছেন সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম।ডা.নূরুল ইসলাম স্পষ্টভাবে আরও বলেন,আমি জানিনা নতুন কাকে কাকে অর্ডার দিয়েছে।বিভিন্ন সময় আমার কানে আসে। ওয়ার্ড মাস্টার হিসাবে দায়িত্ব পালনের জন্যে আগেই টাকা-পয়সা লেনদেন করে রাখছে।এখন নতুনভাবে টাকা-পয়সার লেনদেন হয়েছে কিনা সেটা আমি জানিনা। আগে যে লেনদেন হয়েছে ওইটাকে জায়েজ করার জন্য এখন এইটা হইতেছে নাকি। আবার নতুন করে টাকা পয়সার খেলা চলতেছে।এত ভালো মানুষ জগতে আছে? এমনি এমনি আগ বাড়াইয়া একজনকে প্রমোশন দিলাম একজনকে পদাবনতি দিলাম।এর পিছনে কি কারণ থাকতে পারে টাকা-পয়সার যে অভিযোগগুলো আসতেছে লেনদেনের বিষয় শুনতেছি তাহলে সেটাই সঠিক কিনা। আপনারা সরাসরি পরিচালকের কাছে সাংবাদিক হিসেবে জানতে চাইতে পারেন যে একই অফিসে দুই রকম নিয়ম-কানুন চলতেছে।আপনার প্রশাসনিক ব্লকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা যারা আছে তারা সবাই জানে কিনা। নাকি একমাত্র আপনি একাই হাসপাতাল চালাচ্ছেন।আমি সৎ থাকার চেষ্টা করি, নিরিবিলি থাকার চেষ্টা করি এই সুযোগ নিয়ে কেউ যদি ধান্দাবাজি করে অসতের চরম পর্যায়ে পৌঁছায় সেটা একসময় সামনে আসবে এবং সেটা আপনাদের মাধ্যমেই সামনে আসবে। তখন তো ঠিকই ধরা পড়বে। ধরা যদি পড়ে তাহলে আগে ধরলেই ভালো হয়।যদি আর্থিক লেনদেনের বিষয় থাকে। এরকম লেনদেনের বিষয় যদি না থাকে তাহলে তো প্রশাসনের সবাই জানবে। তিন দিন অর্ডার হয়ে গেছে আমি একজন ডিডি এডমিন আমি জানিনা।তাহলে কে কে জানে এটা খুঁজে বের করা দরকার। আর সেটা আপনাদের তথা সাংবাদিকদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি।ঢাকা মেডিকেলের মত জায়গায় প্রশাসনের নাকের ডগায় এই অনিয়ম কেন হবে এই প্রশ্ন আমরা করতেই পারি। সর্বশেষ ৯ অক্টোবর এই উপ পরিচালকের সাথে আবারও কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে তিনি জানান, ১ তারিখের অর্ডার হওয়া চিঠি ৮ কর্ম দিবস পার হলেও আমি অফিসিয়ালি এখনো পাইনি।
এদিকে তিন অক্টোবর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুর রহমানের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের তিনি জানান, আমি এই মুহূর্তে বাসায় আছি। অর্ডারের কপি আমি পেয়েছি এবং সেটা আমার অফিসে আছে।
নিয়মবহির্ভূতভাবে হাসপাতালে ওয়ার্ড মাস্টার দেয়া হচ্ছে কিনা এবং এখানে কোন আর্থিক লেনদেন আছে কিনা এমন বিষয় জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন,প্রথম কথা হচ্ছে এখানে আর্থিক লেনদেন হয়নি।তবে কেউ করে থাকলে সেটি আমার নলেজে নেই।আর হাসপাতালে ওয়ার্ড মাস্টার যাদের করা হচ্ছে এটা নিয়ম তান্ত্রিকভাবেই হচ্ছে এবং রিকুয়ারমেন্টের বেসিসেই হচ্ছে এত বড় হাসপাতালে।যখন ৬ জন জন ওয়ার্ড মাস্টার ছিল ওয়ার্ডের সংখ্যা কম ছিল। আপনি বলেন নতুন ভবনে কি একজন ওয়ার্ড মাস্টার দিয়ে চালানো যায় কিনা।কাজের সুবিধার্থে আরো লোকজনকে অ্যাকাউন্টেবল করতে পারে। এই কারণের জন্য আমরা কিছু পদ বাড়িয়েছি। অনেক ক্ষেত্রে একজন কাভার করতে পারে না। এইসব বিবেচনায় আমরা কিছু পদ বাড়িয়েছি। আমাদের এখানে ওয়ার্ড মাস্টার বেসিক্যালি তিনজন বাকিদের তো প্রমোশন দিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। এগুলো আমরা নিয়ম তান্ত্রিকভাবেই করেছি এবং আমাদের অফিসাররা সিলেকশন করে যাদের যোগ্য ভাল মনে করছে তাদেরকেই দিয়েছি।
অক্টোবরের ১ তারিখে নতুন আরেকটি চিঠি করেছেন সেখানে উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ও ওয়ার্ড মাস্টার সহ অন্যান্যরা এখন পর্যন্ত চিঠি পায়নি এবং দুইজনকে আগস্ট মাসে ওয়ার্ড মাস্টার হিসেবে চিঠি করেছিলেন তাদের মধ্য থেকে একজনকে আগের পদে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে ও এক ওয়ার্ডের ভিতর দুইজন ওয়ার্ড মাস্টার দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুইজন আছে আপনি যেটা বলছেন এদের মধ্যে বহির্বিভাগে একজন রিটায়ারমেন্ট চলে যাবে। কাজ বুঝে নেওয়ার জন্য কয়েকদিন আপাতত ওপার ল্যাপিং হচ্ছে সেজন্য। কেবিনেও দুইজন দেওয়া আছে এগুলো বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের চাহিদা আছে অনেককে চায়না সেগুলো আমরা চেঞ্জ করে দিচ্ছি।আমি অমুক ব্যক্তিকে চাইনা তাকে এখান থেকে সরায় দেন। এই হিস্ট্রি গুলো আমরা জানি। তো আমার মনে হয় এগুলো আমাদের ইন্টার্নাল বিষয় আপনারা এসব বিষয় নিয়ে এত বেশি কনসার্ন না হলেও চলবে। আপনি যদি এগুলোর প্রত্যেকটার এক্সপ্লানেশন চান আমার কাছে আছে। আমার অফিসাররা এগুলো আলোচনা করেই ডিসিশন নিয়েছে এবং যারা ভালো তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। মনে হয়েছে যারা অ্যাপারেন্টলি এই কাজগুলো করতে পারে।
আগস্টের ১৭ তারিখ দুইজনকে ওয়ার্ড মাস্টার করে চিঠি দিয়েছিলেন কিন্তু একজন কি এমন ভাল কাজ করেছে আর একজন কি এমন খারাপ কাজ করেছেন যে তাকে আগের পদে ফিরিয়ে দিয়েছেন? এই বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, দেখেন আমার কিন্তু অনেক বড় বড় কাজ আছে,আপনি যেগুলো নিয়ে কথা বলছেন এগুলো আমার কাছে খুব ইম্পরট্যান্ট বিষয় মনে হচ্ছে না। আপনারা যেগুলোতে যে জিনিসগুলো নিয়ে প্যাচান এগুলো আমার কাছে অনেক সিলি একটি বিষয়। একজন ওয়ার্ড মাস্টার কাকে দিলাম কে কোথায় কাজ করল না করল, কোথায় একজন না দুইজন এগুলো নিয়ে আপনি কথা বলছেন এগুলো কিন্তু আমার কাজ আমার দায়িত্ব বুঝছেন। এগুলো নিয়ে আপনার কথা বলার কথা না কিন্তু।এগুলো নিয়ে আপনারা প্যাচাতে পারেন তাহলে আর আমরা কাজ করতে পারবো না।আমরা ওয়ার্ড মাস্টার ওয়ার্ড বয় আয়া নিয়ে থাকতে হবে তাহলে আর বড় কাজ করতে পারবো না। আপনার কাছে কি কি অসংগতি মনে হচ্ছে বললেন এগুলো আমার কাছে লিখে নিয়ে আসেন। আমি আছি আসেন এখন আমার কাছে।আমি তো একা কাজগুলো করিনাই আমি। একা ডিসিশন নিয়ে করি না। কোনটার পিছনে কে কি বলছে না বলছে এখানে কোন কিছু করতে গেলে সমস্যা, তাহলে আমরা হাসপাতাল চালাবো কিভাবে। আমাদের চেঞ্জ করতে হবে ওখানে অমুককে কেন দিলেন ওইখানে বোধহয় কোন লেনদেন আছে ওইখানে দুইজন কেন ওইখানে তিনজন কেন এত এক্সপ্লানেশন দিতে গেলে তো সমস্যা বুঝছেন। আপনার কি কি অসঙ্গতি আছে আপনি আসেন সারাদিন বসি অসুবিধা নাই। আমরা আসলে কাজ করতে পারি না আপনাদের এত কোয়ারিজ দিতে গিয়ে আমরা অন্য ভাল কাজ করতে পারি না। এমন এমন প্রশ্ন করা হয় যেন আমরা এটা নিয়েই বসে আছি। আমি রাত আটটা নয়টা দশটা পর্যন্ত হাসপাতালে থাকি এবং কাজ করি। এখানে যাতে হাসপাতালে ভালো হয় সেজন্যই এই কাজগুলো করা। এটার পিছনে কেউ যদি কোন অবৈধ কিছু করে থাকে সেটা আমি বলতে পারব না এবং এটা আমার পক্ষে সম্ভবও না।
ব্রিগেডিয়ার আরো বলেন, একটা বিল্ডিং-এ একজন আছেন আর একজনকে দেওয়া যায় একজনকে তো দিতে হবে। তাহলে কে ভালো একজনকে খুঁজে বের করে আমার অফিসাররা বলল এ ভালো তাকে দেওয়া যেতে পারে। সবাই ওটাতে সাইন করে একটা যখন অর্ডার হয় আমার এডি ডিডিরা কিন্তু সাইন করে।
আপনার এডি ডিডিসহ অন্যরা এখনো এই চিঠি পায়নি এমন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিককে বলেন, কে চিঠি পাইল না পাইলো এই কৈফিয়ত তো আপনাকে দিতে পারবো না। কে জানে না জানে এত হিসাব আমি দিতে পারবো না। কোন ডিডি পাইনি নুরুল ইসলাম তাহলে আপনাদের সে এসব বলেছে। আমার অফিসিয়াল সব বিষয়ে বলতে বাধ্য না। সব বিষয়ে যদি এডি ডিডিদের জানাতে হয় তাহলে আমি এখানে কি জন্য আছি। কিন্তু যারা আমার কনসার্ন যারা আমাকে হেল্প করে ধরেন আমি এখানে একটি কাজ করতে গেলাম আমার ডিডি ধরেন আমার সাথে এগ্রি করে না তার মানে কি আমি কাজটি করব না। আমি সবসময় ক্ষমতার অধিকারী হলেও আমি সবার কনসার্ন নিয়েই কাজ করি।একটি কাজ করতে গেলে কেউ যদি বিরোধিতা করে সবাইকে রাজি করিয়ে তো কাজ করা তোর মুশকিল। এক একজনের যদি এক এক ধরনের ইন্টারেস্ট থাকে তাহলে তো সমস্যা। আমি এমন কোনটা দেখি না যে সবাই একদিকে আমি আর একদিকে এমনটা কখনোই হবে না। এই নামগুলো তারাই সিলেক্ট করেছে হয়তো আমার ডিডি স্পেসিফিক কি কোন কিছু জানে কিনা আমি জানিনা এগুলো নিয়ে আমার অনেক বিরক্ত লাগে। একজন ওয়ার্ড মাস্টার সরদার ব্রডবয় নিয়ে আপনার সাথে কথা বলতেছি। আগে কি হইছে না হইছে আমি জানিনা আমি এতোটুকু বলতে পারি আমার পিরিয়ডে সব কিছু সৎ উদ্দেশ্যে সৎভাবে করা হচ্ছ।