স্বৈরাচার উৎখাতে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে সংগঠিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে উজ্জ্বীবিত আশার প্রতীক বলে মন্তব্য করেছেন মেক্সিকোতে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।
তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নের ভিত্তিটা ছিলো একটি গণতান্ত্রিক এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক দেশ গড়ে তোলা। পাঁচ দশকের বেশী সময় পর আজও সেই স্বপ্ন পূরণের যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারের অধিকার আদায়ে ছাত্র-জনতাকে রাজপথে রুখে দাঁড়াতে হয়েছে। সাহস এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে রাজপথে দাঁড়িয়ে যাওয়া ছাত্র-জনতা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে তৈরি করেছেন বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) মেক্সিকো সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ৫৪তম স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মুশফিক এসব কথা বলেন। এতে গেস্ট অব অনার হিসেব উপস্থিত ছিলেন মেক্সিকো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মহাপরিচালক ফার্নান্দো গনজালেজ সাইফি। এছাড়া মেক্সিকোতে অবস্থানরত ৫০টির ও বেশি দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশনপ্রধান, রাজনীতিক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি মনোমুগ্ধকর করে তুলে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি এবং তার মেয়ে রোদেলার দ্বৈত পারফরম্যান্স। তিনি বাংলা, ইংরেজির পাশাপাশি স্পেনিশ ভাষায় গান গেয়ে সবাইকে মুগ্ধ করে তোলেন। এছাড়া আয়োজন করা হয় দলীয় নৃত্যের।
রাষ্ট্রদূত মুশফিক তার বক্তব্য বলেন, ২৬ মার্চ প্রতিটি বাংলাদেশির হৃদয়ে মর্যাদার জায়গা দখল করে রয়েছে। এই দিন থেকে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। জনগণের মুক্তির সে সংগ্রামে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জন্ম হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের।
তিনি বলেন, এ যুদ্ধটা শুধু বিদেশি শক্তির অধীনতা থেকে মুক্তির যুদ্ধ ছিলোনা বরং এ যুদ্ধটা ছিলো শোষণ, বৈষম্য এবং অন্যায় থেকে মুক্তি লাভের। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নের ভিত্তিটা ছিলো একটি গণতান্ত্রিক এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক দেশ গড়ে তোলা।
মুশফিক বলেন, পাঁচ দশকের বেশী সময় পর আজও সেই স্বপ্ন পূরণের যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারের অধিকার আদায়ে ছাত্র-জনতাকে রাজপথে রুখে দাঁড়াতে হয়েছে। সাহস এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে রাজপথে দাঁড়িয়ে যাওয়া ছাত্র-জনতা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে তৈরি করেছেন বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান শুধু একটি বিক্ষোভ নয় বরং আমাদের উজ্জ্বীবিত আশার প্রতিক। এই আশাকে বাস্তবে রুপ দিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাহস এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই-- এই প্রধান বিষয়গুলোর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শেষপর্বে রাষ্ট্রদূত মুশফিক আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটায় অংশগ্রহণ করেন এবং অতিথিদের বাংলাদেশি ঐতিহ্য অনুযায়ী খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করানো হয়।
আমার বার্তা/জেএইচ