সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক হিন্দু নারীকে মারধরের যে দৃশ্য বাংলাদেশের ঘটনা দাবি করা হচ্ছে, সেটি আসলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ঘটেছে বলে জানিয়েছে রিউমর স্ক্যানার।
এক প্রতিবেদনে বুধবার (১ জানুয়ারি) এই ফ্যাক্টচেকিং প্ল্যাটফর্ম জানিয়েছে, ভিডিওর নারী বাংলাদেশি নন, বরং তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের বাসিন্দা।
প্রকৃতপক্ষে, প্রেমের সম্পর্কের জেরে এক মুসলিম নারীকে নিয়ে পালিয়ে যান ওই নারীর ছেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এই পরিবারের লোকজন ছেলেটির বাড়িতে হামলা চালিয়ে ছেলের মাকে আহত করেন। তারই দৃশ্য এটি।
প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওর ক্রেডিট দেওয়া হয়েছে Avroneel Hindu (অভ্রনীল হিন্দু) নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টকে।
ওই অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত মূল পোস্ট থেকে জানা যায়, ভারতের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার থানার অধীনে শ্যামসুন্দর গ্রামে স্থানীয়রা একজন হিন্দু ছেলের বাড়িতে আক্রমণ চালায়। কারণ ছেলেটি একজন মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছে। হামলাকারীরা ছেলেটির বাড়ি ভাঙচুর করে এবং ছেলেটির মাকে আহত করে।
পরবর্তী অনুসন্ধানে গত ২২ ডিসেম্বর বাংলার কথা নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ‘অবৈধ সম্পর্কের জেরে মার খেতে হলো ছেলের মাকে’ শীর্ষক একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আহত নারীর নাম শঙ্করী ভুঁইয়া। মূলত তার ছেলে শুভঙ্কর ভূঁইয়ার সঙ্গে ফিরোজা খাতুন নামের মুসলিম এক নারীর চার বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছয় মাস আগে ফিরোজা খাতুনের অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও তাদের প্রেমের সম্পর্ক বজায় থাকে। মাস খানেক আগে তারা পালিয়ে যায়। মেয়ের কোনো খোঁজ না পাওয়ায় মেয়ের পরিবার ছেলের বাড়িতে হামলা চালায়। অর্থাৎ, হামলায় আহত নারীটি বাংলাদেশি নন।
অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গের একটি পারিবারিক সংঘর্ষের ঘটনাকে বাংলাদেশের ধর্মীয় সহিংসতার মিথ্যা রূপ দিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এই ভিডিওর দাবিগুলি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর।
আমার বার্তা/এমই