বাংলাদেশের উন্নয়নের দিশারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে গত দেড় দশকে দেশ বিস্ময়কর প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ঘটেছে। সামাজিক সূচকেও বাংলাদেশের অর্জন অতুলনীয়। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আগামী ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে আনুষ্ঠানকিভাবে আমাদের উত্তরণ ঘটবে।
তবে এ উত্তরণের পর বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সকল নিয়ম-কানুন অন্যান্য উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মত সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। আমাদের দেশে প্রস্তুতকৃত পণ্য বর্তমানে বিভিন্ন দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রেফারেনসিয়াল শুল্কে ও কোটামুক্ত প্রবেশের সুবিধা পেয়ে থাকে, যা উত্তরণের পর ক্রমান্বয়ে হ্রাস হবে। রপ্তানিতে যে নগদ প্রণোদনা প্রদান করা হয় তাও পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করে নিতে হবে এবং একই সাথে আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান শুল্ক-কর হার পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনতে হবে। এর ফলে দেশে প্রস্তুতকৃত যে সকল পণ্য উচ্চ আমদানি শুল্কের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিরক্ষণ সুবিধা পেয়ে আসছে, আগামীতে তারা মুক্ত প্রতিযোগীতার সম্মুখীন হবে। পরিবর্তিত এ বাস্তবতায় স্থানীয় শিল্পকে নিজেদের দক্ষতা ও কৌশল দিয়েই বহির্বিশ্বের সাথে প্রতিযোগীতা করে টিকে থাকতে হবে।
এ প্রেক্ষাপটে উৎপাদনে নতুন ও উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহার, পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন, নতুন পণ্য উদ্ভাবন এবং কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পপণ্যের প্রতিযোগীতার সক্ষমতা বৃদ্ধি, পণ্য বৈচিত্রায়ন ও পণ্যের বহুমুখীকরণে যথাযথ নীতি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণকে মসৃণ ও টেকসই করার লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। সে উদ্দেশ্যে অর্থাৎ স্বল্পোন্নত দেশ হতে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য Smooth Transition Strategy (STS) প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকার উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে। উক্ত কমিটি এবং তার অধীনে গঠিত বিভিন্ন উপ-কমিটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন কৌশল নিরুপণ করেছে, যার ভিত্তিতে উত্তরণের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
আমার বার্তা/এমই