আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। কিন্তু এত সব লোশন, স্প্রে ও জেলের মধ্যে থেকে বেছে নেবেন কোনটি? কোন সানব্লক সত্যিই সানবার্ন ও স্কিন ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে?
সূর্য থেকে ত্বক সুরক্ষিত রাখতে কোন সানস্ক্রিন বেছে নিচ্ছেন সেটা ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ, যতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা সঠিকভাবে ব্যবহার করা।
অনেকেই সানবার্ন হলে সানস্ক্রিনকে দোষ দেন, কিন্তু সমস্যাটা সাধারণত সানস্ক্রিনে নয়, ব্যবহারকারী লেবেল না পড়ে ভুলভাবে সানস্ক্রিন লাগানোর কারণে হয়, বলেন টেক্সাসের এমডি অ্যান্ডারসন ক্যানসার সেন্টারের ডার্মাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সুসান ওয়াই চোন।
সানস্ক্রিনের সুরক্ষা পূর্ণমাত্রায় পেতে কিছু টিপস ও দিয়েছেন তিনি। তাই বাইরে বের হওয়ার আগে এই টিপসগুলো মেনে চলুন-
১. ইউভিএ ও ইউভিবি দুটোর সুরক্ষাই জরুরি
সবসময় এমন সানস্ক্রিন বেছে নিন যা ইউভিএ ও ইউভিবি দুটো রশ্মিই ব্লক করে। ইউভিবি রশ্মি সানবার্ন ও ত্বকের ক্ষতি করে, আর ইউভিএ রশ্মি স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই জিংক অক্সাইড বা টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন বেছে নিন – এগুলো ইউভিএ ও ইউভিবি দুটো থেকেই সুরক্ষা দেয়।
২. এসপিএফ ৩০ বা তার বেশি বেছে নিন
এসপিএফ ৩০ বা তার বেশি রেটিংযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এসপিএফ হলো সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর, যা সূর্যের রশ্মি শোষণ ও প্রতিফলিত করে ত্বক পুড়ে যাওয়া থেকে বাঁচায়।
আপনি কি সঠিকভাবে সানস্ক্রিন ব্যবহার করছেন
তবে মনে রাখবেন, এসপিএফ যত বেশি, সুরক্ষা তত বেশি – এ ধারণা ভুল। এসপিএফ ৩০ সূর্যের ৯৭% রশ্মি শোষণ করে, আর এসপিএফ ৫০ শোষণ করে মাত্র ৯৮%। অর্থাৎ, এসপিএফ ৩০-এর চেয়ে এসপিএফ ৫০-এর সুরক্ষা মাত্র ১% বেশি।
এসপিএফ ৩০-এর বেশি নিলেও একই নিয়মে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। একই পরিমাণ ও একই সময় পর পর লাগাতে হবে।
৩. সময়মতো ও পর্যাপ্ত পরিমাণে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
ত্বক সানস্ক্রিন শোষণ করতে ৩০ মিনিট সময় নেয়। তাই ত্বকের যেসব অংশে রোদ পড়বে সেসব স্থানে বাইরে যাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন।
পরিমাণের দিকেও খেয়াল রাখুন। অধিকাংশ মানুষ পর্যাপ্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন না, বলেন ডা. চোন।
৪. প্রতি দুই ঘণ্টা পর পুনরায় লাগান
সানস্ক্রিনের সুরক্ষা পুরো দিন থাকে না। প্রতি দুই ঘণ্টা পর আবার লাগান। তবে স্প্রে সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ও সাঁতার বা ঘামলে ৬০-৯০ মিনিট পরপর লাগান
৫. শুধু সানস্ক্রিনের উপর নির্ভর করবেন না
সানস্ক্রিন একাই সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিতে পারে না। তাই বাড়তি সুরক্ষার জন্য এসপিএফ ৩০+ যুক্ত লিপ বাম, চওড়া টুপি, ইউভি প্রোটেকশনযুক্ত সানগ্লাস, লম্বা হাতাওয়ালা জামা বা সান-প্রোটেক্টিভ কাপড় ব্যবহার করতে পারেন।
সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সরাসরি সূর্যের আলো এড়িয়ে চলুন – এ সময় UV রশ্মি সবচেয়ে ক্ষতিকর। মনে রাখবেন, কোন সানস্ক্রিনই ১০০% সুরক্ষা দিতে পারে না। কিন্তু সঠিকভাবে সানস্ক্রিন ব্যবহার ও বাড়তি সতর্কতা মেনে চললে সানবার্ন ও স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব, বলেন ডা. চোন।
আমার বার্তা/জেএইচ