মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণের মামলায় পুলিশ চার্জশিট প্রস্তুত করেছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, তাঁরা আশা করছেন চার্জশিট আজকেই আদালতে দাখিল করা হবে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা এই তথ্য জানান।
গত ১ মার্চ মাগুরার শিশুটি নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। এর আগে ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগে মামলা করেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। তাঁরা সবাই কারাগারে আছেন। এর মধ্যে প্রধান আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন।
আসিফ নজরুল বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন পরিবর্তনের পর চার্জশিট দাখিল হবে। এ অনুসারে ধর্ষণ মামলায় ৯০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করতে হবে। তবে যেহেতু মাগুরার ঘটনায় ডিএনএতে আলামত মিলেছে, তাতে তিনি ধারণা করছেন আরও দ্রুতগতিতে তদন্ত শেষ হবে।
>> ৭১৮৪ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ
সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে রাজনৈতিকভাবে যে হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে তার মধ্যে এ পর্যন্ত ৭ হাজার ১৮৪টি মামলা আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ করার পর তা প্রত্যাহারে অল্প কিছুদিন লাগে বলে জানান উপদেষ্টা।
সাম্প্রতিক সময়ে জামিনের প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন জামিন হলেও বলা হয় আইন মন্ত্রণালয় কী করছে, আসিফ নজরুল কী করছেন? তিনি বলেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মামলায় যেসব জামিন হয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখেছেন, প্রায় সব মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের বিষয়ে কোনো মন্তব্য বা ব্যাখ্যা করা এখতিয়ার তাঁদের ( আইন মন্ত্রণালয়) নেই। এখানে অধিকাংশ মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন হয়েছে। যেমন বগুড়ার ১৩০টি মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন দেওয়া হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে অধস্তন আদালত যে কাজটি করে, যখন আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হয় তখন পুনরায় জামিন চাইতে গেলে অধস্তন আদালত থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই জামিনকে বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অধস্তন আদালত থেকেও জামিন দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন এ বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ আসার পর তা পর্যালোচনা করে দেখেছেন। তাতে দেখা গেছে যারা জামিন পেয়েছেন তাদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা এজাহারভুক্ত আসামি না।
আমার বার্তা/এমই