জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে।
এমন অবস্থায় কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল পিটিআই। একইসঙ্গে ইমরানকে রেখে সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজনের দাবিও করেছে দলটি।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় বিরোধী দল পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) তাদের দলনেতা ইমরান খানের মুক্তির দাবি জানিয়েছে, যাতে তিনি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিতে পারেন।
সোমবার পাকিস্তানের সিনেটে পিটিআই এই দাবি জানায়। একই সঙ্গে দলটি অবিলম্বে একটি সর্বদলীয় সম্মেলন (মাল্টি-পার্টি কনফারেন্স) আয়োজনের আহ্বানও জানিয়েছে, যেখানে ইমরান খানের উপস্থিতি নিশ্চিত করার দাবিও করা হয়েছে।
সিনেটে পিটিআইয়ের পার্লামেন্টারি নেতা সিনেটর আলী জাফর বলেন, “রাজনৈতিক মতপার্থক্য একপাশে রেখে এখন দেশের স্বার্থে ঐক্য জরুরি। বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় বৈঠকই একমাত্র সঠিক পদক্ষেপ।”
তিনি বলেন, ইমরান খান যদি এমন বৈঠকে অংশ নিতে পারেন, তাহলে তা বিশ্বকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেবে যে— পাকিস্তান ঐক্যবদ্ধ, আর এতে দেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।
আলী জাফর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে “নাৎসি মানসিকতার” সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ভারত মিথ্যা অভিযোগে পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে, অথচ পাকিস্তান নিজেই সন্ত্রাসবাদের শিকার।
পিটিআই নেতা শিবলি ফারাজ বলেন, ইমরান খানকে টেলিভিশনে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক, যাতে তিনি জনগণকে মিনার-ই-পাকিস্তানে জমায়েত হওয়ার এবং ভারত সীমান্তের দিকে (ওয়াগা সীমান্ত) পদযাত্রা করার ডাক দিতে পারেন। তিনি দাবি করেন, এই ডাকে এক কোটির বেশি মানুষ সাড়া দেবেন।
তিনি বলেন, “শুধু জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি ভারতকে শক্ত বার্তা দিতে পারেন”। একইসঙ্গে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ভিত্তিতে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সব রাজনৈতিক বন্দির মুক্তি দাবিও করেন।
ক্ষমতাসীন পিএমএল-এনের সিনেটর ইরফানুল হক সিদ্দিকী বলেন, “পেহেলগামের হামলা একটি ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন, যেটি ভারতের কর্তৃপক্ষই পরিচালনা করেছে পাকিস্তানকে হেয় করার জন্য।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যেখানে প্রতি সাতজন কাশ্মিরির বিপরীতে একজন করে ভারতীয় সেনা মোতায়েন করা আছে, সেখানে এতো কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কীভাবে এমন বড় হামলা সম্ভব?”
সিনেটর সিদ্দিকী আরও বলেন, ভারতের অভ্যন্তর থেকেও এখন মোদির নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠছে এবং আন্তর্জাতিক মহলও ভারতের দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
আমার বার্তা/জেএইচ