ই-পেপার শনিবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে উৎখাতে ভারতের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন
আমার বার্তা অনলাইন
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭

বিগত ২০২৩ সালের শেষ দিকে মোহাম্মদ মুইজ্জু ভারতের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। নবনির্বাচিত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট জ্বালাময়ী ভাষণে তাঁর দেশ থেকে ভারতীয় সৈন্যদের বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁর অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও ছিল এটি। ততদিনে মালদ্বীপের নাগরিকদের মধ্যেও ভারতবিরোধিতা তীব্র রূপ ধারণ করেছে। মানুষের এই মনোভাবকেই তিনি ভোটের রাজনীতিতে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন। তিনি সফলও হয়েছেন।

শুরু থেকেই মুইজ্জু ভারতের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলার নীতি গ্রহণ করেন। বেইজিংয়ের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করার চেষ্টাও করেন।

এই পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি নাগাদ ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)–এর পক্ষে কাজ করা এজেন্টরা মুইজ্জুকে অপসারণের সম্ভাবনা নিয়ে মালদ্বীপের বিরোধী নেতাদের সঙ্গে গোপনে আলোচনা শুরু করেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই একটি পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেন তাঁরা। এই আলোচনায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।

‘ডেমোক্রেটিক রিনিউয়াল ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষক একটি অভ্যন্তরীণ নথি উদ্ধার করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। সেই নথিতে দেখা গেছে, মালদ্বীপের বিরোধী রাজনীতিকেরা মুইজ্জুর নিজ দলের সদস্যসহ ৪০ জন সংসদ সদস্যকে ঘুষ দিয়ে প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রস্তাব দেন। নথিতে আরও দেখা গেছে, মুইজ্জুকে অপসারণ নিশ্চিত করতে ১০ জন ঊর্ধ্বতন সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তা এবং তিনটি প্রভাবশালী অপরাধী চক্রকে অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিভিন্ন পক্ষকে ঘুষ দেওয়ার জন্য র–এর এজেন্টরা ৮ কোটি ৭০ লাখ মালদ্বীপি রুপিয়া (প্রায় ৬০ লাখ মার্কিন ডলার) সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছিল। মালদ্বীপের দুজন সরকারি কর্মকর্তার মতে, এই অর্থ ভারতের কাছ থেকে সংগ্রহের পরিকল্পনা ছিল।

মাসব্যাপী গোপন আলোচনা সত্ত্বেও, ষড়যন্ত্রকারীরা মুইজ্জুকে অভিশংসনের জন্য যথেষ্ট সমর্থন জোগাড় করতে ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত ভারত মুইজ্জুকে উৎখাতের এই পরিকল্পনায় সমর্থন বা অর্থায়নের দিকে আর এগোয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুইজ্জুকে অপসারণের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হলেও এই ঘটনা এবং এর পটভূমি ভারতের সঙ্গে চীনের একটি বৃহত্তর, ছায়া প্রতিযোগিতার একটি বিরল দৃষ্টান্ত তুলে ধরে। এশিয়ার কৌশলগত এলাকাগুলোতে এবং এর আশপাশের জলসীমায় প্রভাব বিস্তারের যে তীব্র প্রতিযোগিতা বেইজিং ও দিল্লির মধ্যে চলছে সেটি এই ঘটনায় আরও স্পষ্ট।

এই প্রতিযোগিতা বিশেষত ভারত মহাসাগরের ছোট ছোট দেশগুলোতে প্রসারিত হয়েছে, যেখানে এশিয়া মহাদেশের দুটি বৃহত্তম শক্তি তাদের পছন্দের রাজনীতিকদের সমর্থন করতে উদারহস্তে ঋণ, অবকাঠামো প্রকল্প এবং রাজনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের সাহায্য সহযোগিতা প্রকাশ্যে এবং গোপনে দুভাবেই চলছে।

চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়াদিল্লির জন্য একটি দীর্ঘস্থায়ী পররাষ্ট্রনীতি ও কৌশলগত সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে। কয়েক দশক ধরে, ভারত মানবিক সহায়তা প্রদান এবং দক্ষিণ এশিয়ার ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোকে সমর্থন করে এসেছে, এই আশায় যে তারা এমন নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে ক্ষমতায়ন করবে যারা নিজেদের নয়াদিল্লির সঙ্গে মিত্রতার সম্পর্কে যুক্ত থাকবে। এটিই ছিল ভারতের নীতি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত প্রায়ই এই গণতান্ত্রিক আদর্শগুলোর বিপরীত কাজ করেছে এবং নির্বাচিত নেতাদের ওপর আগ্রাসী হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এমন সব স্থানীয় ক্ষোভকে উসকে দিয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট শক্তিগুলোকে পাকিস্তানের কাছাকাছি এবং আরও সাম্প্রতিককালে আরও বেশি করে চীনের কাছাকাছি নিয়ে গেছে বলে প্রতীয়মান হয়।

ভারত মহাসাগরের ১ হাজার ২০০ দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত দ্বীপপুঞ্জ মালদ্বীপ। মাত্র ৫ লাখ জনসংখ্যার একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এটি। গত ১০ বছরে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এলাকার একটি হয়ে উঠেছে এই দ্বীপপুঞ্জ। এখানকার দ্বীপগুলোর কয়েকটির আয়তন কয়েকটি ফুটবল মাঠের সমান বড়, এর ভেতর দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচল করে। এই সমুদ্রপথবর্তী দ্বীপে চীনের সম্ভাব্য স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে ভারতীয় কর্মকর্তারা সতর্ক করে যাচ্ছেন। তাঁদের আশঙ্কা এসব অবকাঠামো থেকে সামুদ্রিক ট্রাফিক পর্যবেক্ষণ করা হতে পারে বা চীনা যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিনের আনাগোনাও দেখা যেতে পারে।

এ বিষয়ে র–এর সাবেক প্রধান হরমিস থারাকান ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘মালদ্বীপে একটি অবস্থান প্রতিষ্ঠা—ভারত, চীন বা যে কেউ তা করতে পারে, এটি ভারত মহাসাগরের একটি বৃহৎ অংশ এবং আরব সাগরের ওপর তাদের উল্লেখযোগ্য সক্ষমতা বাড়াবে।

দায়িত্বে থাকার সময় হরমিস থারাকান মালদ্বীপ সম্পর্কিত বিষয়ে কাজ করেছিলেন। কিন্তু বর্তমান ঘটনাবলি সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন তিনি। হরমিস বলেন, মালদ্বীপের মতো নিকটতম প্রতিবেশীদের সঙ্গে একটি নিরাপদ এবং স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আমার বার্তা/জেএইচ

ভারতের মধ্যে চীনের নতুন শহর ঘোষণা, নয়াদিল্লির প্রতিবাদ

উত্তর-পশ্চিম চীনের একটি আঞ্চলিক সরকার সম্প্রতি ভারত ঘেঁসে দুটি নতুন 'কাউন্টি' প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে। ঘাড়ের

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে যা বলছে ভারত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারত এখনো কোনো মন্তব্য করতে প্রস্তুত নয়। এক

‘চুপচাপ’ শামসুদ্দিন জব্বার যুক্তরাষ্ট্রে কেন এত বড় হামলা চালালেন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্সে নতুন বছরের উদযাপনে পিকআপ ট্রাক দিয়ে ভয়াবহ হামলা চালান শামসুদ্দিন জব্বার। এতে

চীনে নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ, মহামারির শঙ্কা!

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের পাঁচ বছর পর চীনে এবার নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পাটগ্রামে সাফ জয়ী নারী ফুটবলারের বাড়ি পরিদর্শন করলেন জেলা প্রশাসক

ইন্দুরকানীতে বকুল মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়গনষ্টিক এর উদ্বোধন

কড়াইলে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে অনু মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন

ঢাবিতে প্রবেশ সীমিত না রাখার দাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের

ভারতের মধ্যে চীনের নতুন শহর ঘোষণা, নয়াদিল্লির প্রতিবাদ

সাকিবের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা নিয়ে ইতিবাচক বার্তা ফারুকের

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে যা বলছে ভারত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দিন: সিপিবি

বিগত সরকার ভারতের স্বার্থরক্ষায় বেশি ব্যস্ত ছিল: চরমোনাই পীর

বাংলা মটরের সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল অজ্ঞাত নারী নিহত

সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ছয় সংস্কার কমিশনের মেয়াদ বাড়ল

আজিমপুরের বাসায় মিলল শিক্ষিকার মরদেহ : স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস

দেশে যেন কখনোই ফ্যাসিবাদ ফিরতে না পারে: গণপূর্ত উপদেষ্টা

কুয়াশায় নিরাপদে গাড়ি চালাতে ৪ নির্দেশনা

কম্বল কিনতে ৪৯৫ উপজেলায় ৩৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বরাদ্দ

সচিবালয়ের দুই দিকের আগুন নিয়ে যা জানালেন বুয়েটের অধ্যাপক

গত ১৫ বছরে ২৮০ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে: ফখরুল

জবি ছাত্রশিবিরের নতুন কমিটি, নেতৃত্বে আসাদুল-রিয়াজুল

দুইশোর আগেই শেষ ভারত, শেষ বেলায় হোঁচট খেলো অস্ট্রেলিয়া

‘দফায় দফায় যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারাই আমানতের খেয়ানত করেছে’