ইসরায়েলে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার কার্যক্রম বন্ধ করার পক্ষে সর্বসম্মতভাবে ভোট দিয়েছে ইহুদিবাদী দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা।
রোববার (৫ মে) একটি সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের পার্লামেন্ট (নেসেট) গাজায় ছয় মাসব্যাপী যুদ্ধের সময় জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত বিদেশি সম্প্রচারক আরজাজিরাকে ইসরায়েলে সাময়িকভাবে বন্ধ করার অনুমতি দিয়ে একটি আইন পাস করার পর এ বিষয়ে ভোট দিয়েছে মন্ত্রিসভা।’
নেতানিয়াহু এক্সে হিব্রু ভাষায় পোস্ট করেছেন, ‘আমার নেতৃত্বাধীন সরকার সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে— ইসরায়েলে উস্কানিমূলক চ্যানেল আলজাজিরা বন্ধ করা হবে।’
পৃথক একটি পোস্টে ইসরায়েলের যোগাযোগ মন্ত্রী শ্লোমো কারহি বলেছেন, ‘তিনি আলজাজিরার বিরুদ্ধে আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
একইসঙ্গে তিনি আলজাজিরার সম্প্রচারে ব্যবহৃত সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে- সম্পাদনা এবং রাউটিং সরঞ্জাম, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, সার্ভার এবং ল্যাপটপ, ওয়্যারলেস ট্রান্সমিশন সরঞ্জাম এবং মোবাইল ফোন ।
ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্ত আলজাজিরার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বিরোধকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। একইসঙ্গে সংবাদমাধ্যমটির অর্থায়নকারী দেশ কাতারের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ানোরও ঝুঁকিও তৈরি করেছে, কারণ ইসরায়েলে এই পদক্ষেপটি এমন সময়ে এলো যখন গাজার যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতার প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে কাতার।
ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আলজাজিরার উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, সংবাদমাধ্যমটির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব এবং হামাসের সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগ এনেছে ইসরায়েল। তবে কাতারভিত্তিক নেটওয়ার্কটি বারবার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধের কয়েকটি আন্তর্জাতিক মিডিয়া আউটলেটের মধ্যে আলজাজিরা একটি, যারা গাজায় ইসরায়েলের বরর্বতাকে তুলে ধরেছে এবং যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চ্যানেলটির বেশ কয়েকজন সংবাদদাতা নিহত ও আহত হয়েছেন।
এর প্ররিপ্রেক্ষিতে গত মাসে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘তিনি ইসরায়েলে আলজাজিরার কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেবেন।’
সেসময় নেতানিয়াহু এক্স-এ পোস্ট বলেছিলেন, ‘আলজাজিরা ইসরায়েলের নিরাপত্তার ক্ষতি করেছে, ৭ অক্টোবরের গণহত্যায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে এবং ইসরায়েলি সৈন্যদের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে।’
আমার বার্তা/এমই