দীর্ঘ ছয় বছরের বিরতির পাশাপাশি গণ-অভ্যুত্থানের পর ভিন্ন প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হলো এবারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। তাই শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশাও ছিল আকাশচুম্বী।
গতjকাল মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আট কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে কোনো সহিংসতা ছাড়াই সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট প্রয়োগ করেন শিক্ষার্থীরা।
যদিও প্রার্থীদের অনেকেই একে অপরের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন। ভোট কারচুপি এবং অনিয়মের অভিযোগ তোলেন কেউ কেউ।
এদিকে ভোটের শেষ মুহূর্তে এসে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্ট সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তাহমিনা আক্তার। রাতে ডাকসু নির্বাচনকে নির্লজ্জ কারচুপির নির্বাচন আখ্যা দিয়ে বর্জনের ঘোষণা দেন ভিপি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা।
রাত পেরিয়ে সকালে চূড়ান্ত ফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে সূচিত হয় নতুন ইতিহাস। নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা ২৮টি পদের মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহ-সাধারণ সম্পাদকসহ (এজিএস) ২৩টি পদেই বিজয়ী হন। অনিয়মের অভিযোগ ও বিতর্ক থাকলেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াটাই পরিবর্তনের বার্তা ছিল বলে মনে করছেন অনেক শিক্ষার্থী।
ঢাবির শিক্ষার্থীরা বলছেন, বাংলাদেশের মানুষ নতুনভাবে রাজনীতিকে আঁকড়ে ধরছে। রাজনীতির পরিবর্তন চাচ্ছে। তার প্রতিফলনই এবারের ডাকসু নির্বাচনে ঘটেছে।
ভোটে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ বাদে বড় ধরনের কিছু ঘটেনি। ইতিহাসের সবচেয়ে স্বচ্ছ নির্বাচন দাবি করে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরাও।
ফল ঘোষণার পর নতুন নেতৃত্বের কাছে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা হলের সিট সংকট সমাধান, শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক সমস্যায় সোচ্চার থাকা।
ভোট নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও ডাকসুকে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের প্রকৃত মঞ্চ হিসেবে গড়ে তোলার প্রশ্নে দ্বিমত নেই কারও।
আমার বার্তা/এল/এমই